পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেদান্ত Va v3 প্রয়োজন নাই ; ঈশ্বরকৃপায় অস্ততঃ আমি এইরূপ নিৰ্ভীক প্রচারক হইবার ভরস রাখি। . এখন পুর্বপ্রসঙ্গের অনুবৃত্তি করিয়া প্রথম জ্ঞাতব্য তত্ত্বগুলির আলোচনা করা যাক প্রথমতঃ সকল বৈদাস্তিক সম্প্রদায় যে-বিষয়ে একমত, সেই জগংহষ্টিপ্রকরণ এবং মনস্তত্ব সম্বন্ধে বুঝিতে হইবে। আমি প্রথমে জগংস্কৃষ্টিপ্রকরণ সম্বন্ধে আলোচনা করিব। আধুনিক বিজ্ঞানের অদ্ভূত আবিস্ক্রিয়াসমূহ যেন বজ্ৰবেগে আমাদের উপর পতিত হইয়া, যাহা আমরা কখন স্বপ্নেও ভাবি নাই, আমাদিগকে এমন অদ্ভূত তত্ত্বসমূহের সম্মুখীন করিতেছে। কিন্তু এগুলির অধিকাংশ বহুযুগ পুর্বে আবিষ্কৃত সত্যসমূহের পুনরাবিক্রিয়ামাত্র। আধুনিক বিজ্ঞান এই সে-দিন আবিষ্কার করিয়াছে যে, বিভিন্ন শক্তিসমূহের মধ্যে একত্ব রহিয়াছে। বিজ্ঞান সবেমাত্র আবিষ্কার করিয়াছে যে, উত্তাপ তড়িৎ {5ोत्रकশক্তি প্রভৃতি বিভিন্ন নামে পরিচিত সমুদয় শক্তিকেই একটি শক্তিতে পরিণত করা যাইতে পারে ; সুতরাং লোকে উহাদিগকে যে-কোন নামেই অভিহিত করুক না কেন, বিজ্ঞান একটিমাত্র নামের দ্বারাই উহাদিগকে অভিহিত করিয়া থাকে । কিন্তু অতি প্রাচীন হইলেও সংহিতাতেও সেই শক্তির এরূপ ধারণা দেখিতে পাওয়া যায়। মাধ্যাকর্ষণই বলে, উত্তাপই বলে, তড়িাই বলে, চৌম্বক শক্তিই বলে, অথবা আন্তঃকরণের চিন্তাশক্তিই বলো, সবই এক শক্তির প্রকাশমাত্র এবং সেই এক শক্তির নাম ‘প্রাণ’ । প্রাণ কি ? প্রাণ অর্থে ম্পন্দন। যখন সমুদয় ব্রহ্মাও লীন হইয়া যায়, তখন এই অনন্ত শক্তিসমূহ কোথায় যায়? এগুলির কি লোপ হয়, মনে কর ? কখনই নহে। যদি বলে, শক্তিরাশির একেবারে ধ্বংস হয়, তবে কোন বীজ হইতে আবার আগামী জগৎ-তরঙ্গ উদ্ভূত হইবে ? কারণ, এই গতি তো চিরকাল ধরিয়া তরঙ্গাকুরে চলিয়াছে—একবার উঠিতেছে, আর একবার পড়িতেছে ; আবার উঠিতেছে, আবার পড়িতেছে । এমনি ভাবে অনন্তকাল ধরিয়া চলিয়াছে। এই জগৎপ্রপঞ্চের বিকাশকে আমাদের শাস্ত্রে স্বষ্টি বলে। ‘স্বষ্টি আর ইংরেজী ‘creation’ শব্দ-দুইটি একাথক নহে। ইংরেজীতে ভাব প্রকাশ করিতে পারিতেছি না, সংস্কৃত শব্দগুলির যথাসাধ্য অনুবাদ,করিয়া বলিতে হয় । ‘স্বষ্টি’ শব্দের ঠিক অর্থ-প্রকাশ হওয়া, বাহির হওয়া । জগৎপ্ৰপঞ্চ প্রলয়ের সময় স্বস্ব হইতে সূক্ষ্মতর হইয়া যাহা হইতে উহার উৎপত্তি হইয়াছিল, সেই