পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ტ ჯ ჯ, স্বামীজীর বাণী ও রচনা ঈশ্বরও এখানে টিকিতে পারেন না । সর্বব্যাপী অথচ ব্যক্তিবিশেষ, হস্ত বিনা যিনি জগৎ স্বষ্টি করেন, চরণ বিনা যিনি গমন করেন ইত্যাদি, কুম্ভকার যেমন ঘট প্রস্তুত করে, সেইরূপে যিনি বিশ্ব স্বষ্টি করেন—বৌদ্ধ বলেন, ঈশ্বর যদি এইরূপ হন, তবে তিনি সেই ঈশ্বরের সহিত যুদ্ধ করিতে প্রস্তুত, তাহাকে উপাসনা করিতে ইচ্ছুক নহেন। এই জগৎ দুঃখপুর্ণ ; ইহা যদি ঈশ্বরের কার্য হয়, বৌদ্ধ বলেন—তবে তিনি এরূপ ঈশ্বরের সহিত যুদ্ধ করিবেন। আর দ্বিতীয়তঃ এইরূপ ঈশ্বরের অস্তিত্ব অযৌক্তিক ও অসম্ভব । তোমরা সকলেই ইহা অনায়াসে বুঝিতে পারে। যাহারা জগতের রচনাকৌশল দেখিয়া উহার একজন পরমকৌশলী নির্মাতার অস্তিত্ব অনুমান করেন, তাহাদের যুক্তিসমূহের দোষ আলোচনা করিবার প্রয়োজন নাই—ক্ষণিকবিজ্ঞানবাদীরাই তাহাদের সমুদয় যুক্তিজাল একেবারে খণ্ডন করিয়াছিলেন। সুতরাং ব্যক্তিবিশেষ ঈশ্বর আর টিকিতে পারিলেন না । f তোমরা বলিয়া থাকো যে, সত্য—শুধু সত্যই তোমাদের একমাত্র লক্ষ্য । ‘সত্যমেব জয়তে নামৃতং, সত্যেন পস্থা বিততো দেবযান: —সত্যেরই জয় হইয়া থাকে, মিথ্যা কখন জয়লাভ করে না, সত্যের দ্বারাই দেবযানমার্গ-লাভ হয়। সকলেই সত্যের পতাকা উড়াইয়া থাকে বটে, কিন্তু উহা কেবল দুর্বল ব্যক্তিকে পদদলিত করিবার জন্য । তোমাদের ঈশ্বর-সম্বন্ধীয় দ্বৈতবাদাত্মক ধারণা লইয়। প্রতিমাপুজক গরীব বেচারার সহিত বিবাদ করিতে যাইতেছ, ভাবিতেছ—তোমরা ভারি যুক্তিবাদী, তাহাকে অনায়াসে পরাস্ত করিয়া দিতে পারো ; আর সে যদি ঘুরিয়া তোমার ব্যক্তিবিশেষ ঈশ্বরকে একেবারে উড়াইয়া দিয়া উহাকে কাল্পনিক বলে, তখন छूमेिं যাও কোথায় ? তুমি তখন বিশ্বাসের দোহাই দিতে থাকে, অথবা তোমার প্রতিদ্বন্দ্বীকে ‘নাস্তিক’ নামে অভিহিত করিয়া চীংকার করিতে থাকে ; দুর্বল লোকে তো চিরকালই চীৎকার করিয়া থাকে, যে আমাকে পরাস্ত করিবে—সেই নাস্তিক ! যদি যুক্তিবাদী হইতে চাও, তবে বরাবর যুক্তিবাদী হও, যদি না পারে। তবে তুমি নিজের জন্য যেটুকু স্বাধীনতা চাও, অপরকে সেটুকু দাও না কেন ? এইরূপ ঈশ্বরের অস্তিত্ব তুমি কিভাবে প্রমাণ করিবে ? অপর দিকে, প্রমাণ করা ধাইতে ১ মুণ্ডক উপ., ৩১৬