পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\og a স্বামীজীর বাণী ও রচনা আর আমাদের সমুদয় শক্তি বৃথা বাক্যে ক্ষয় হইতেছে। ওঠ, জাগো—সামান্য সামান্ত বিষয় ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মত-মতান্তর লইয়া বৃথা বিবাদ পরিত্যাগ কর। তোমাদের সম্মুখে খুব বড় কাজ রহিয়াছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্রমশঃ ডুবিতেছে, তাহাদিগকে উদ্ধার কর । এইটি বিশেষভাবে লক্ষ্য করিও যে, মুসলমানগণ যখন ভারতবর্ষে প্রথম আসে, তখন ভারতে এখনকার অপেক্ষা কত বেশী হিন্দুরবসবাস ছিল, আজ তাহাদের সংখ্যা কত হ্রাস পাইয়াছে । ইহার কোন প্রতিকার না হইলে হিন্দু দিন দিন আরও কমিয়া যাইবে, শেষে আর কেহ হিন্দু থাকিবে না। হিন্দুজাতির লোপের সঙ্গে সঙ্গেই—তাহদের শতদোষ সত্ত্বেও, পৃথিবীর সম্মুখে তাহাদের শত শত বিকৃত চিত্র উপস্থাপিত হইলেও এখনও তাহার যে-সকল মহং ভhবর প্রতিনিধিরূপে বর্তমান, সেগুলিও লুপ্ত হইবে । আর হিন্দুদের লোপের সঙ্গে সঙ্গে সকল অধ্যাত্মজ্ঞানের চূড়ামণি অপূর্ব অদ্বৈততত্ত্বও বিলুপ্ত হইবে । অতএব ওঠ, জাগো—পৃথিবীর আধ্যাত্মিকতা রক্ষা করিবার জন্য বাহু প্রসারিত কর । আর প্রথমে তোমাদের স্বদেশের কল্যাণের জন্য এই তত্ত্ব কার্যে পরিণত কর । ব্যাবহারিক জগতে অদ্বৈতবাদ একটু কাজে পরিণত করা আমাদের যত প্রয়োজন, আধ্যাত্মিক তার প্রয়োজন ততটা নয় ; প্রথমে অন্নের ব্যবস্থা করিতে হইবে, তারপর ধর্ম। গরীব লোকেরা অনশনে মরিতেছে, আমরা তাহাদিগকে অতিরিক্ত ধর্মোপদেশ দিতেছি । মত-মতান্তরে তো আর পেট ভরে না ! আমাদের একটি দোষ বড়ই প্রবল—প্রথমতঃ আমাদের দুর্বলত, দ্বিতীয়তঃ ঘৃণা—হৃদয়ের শুষ্কত। লক্ষ লক্ষ মতবাদের কথা বলিতে পারে, কোটি কোটি সম্প্রদায় গঠন করিতে পারে, কিন্তু যতদিন না তাহাদের দুঃখ প্রাণে প্রাণে অনুভূব করিতেছ, বেদের উপদেশ অনুযায়ী যতদিন না জানিতেছ যে, তাহার। তোমার শরীরের অংশ, যতদিন না তোমরা ও তাহার, দরিদ্র-ধনী, সাধু-অসাধু সকলেই সেই অনস্ত অথগুরূপ —যাহাকে তোমরা ব্রহ্ম বলো, তাহার অংশ হইয়া যাইতেছে, ততদিন কিছু হইবে না । ভদ্রমহোদয়গণ, আমি আপনাদের নিকট অদ্বৈতবাদের কয়েকটি প্রধান প্রধান ভাব প্রকাশ করিবার চেষ্টা করিয়াছি। এখন উহাকে কাজে পরিণত করিবার সময় আসিয়াছে4-শুধু এ-দেশে নয়, সর্বত্র। আধুনিক বিজ্ঞানের ' লৌহমুদগরাঘাতে দ্বৈতবাদাত্মক ধর্মগুলির কাচনির্মিত ভিত্ত্বিসমূহ সর্বত্র চুর্ণবিচূর্ণ g