পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○88 স্বামীজীর বাণী ও রচনা { আলোচনা করিয়া থাকেন। তবে অধ্যাপক ডয়ুসনের মতো ব্যক্তিও আছেন, দর্শনচর্চার জন্তই যাহাদের দর্শনচর্চায় আগ্রহ আছে, অন্য কারণে নহে। আশা করি, ভবিষ্যতে ইওরোপে সংস্কৃতচর্চায় আরও অধিক ষত্ব দেখা যাইবে । পূর্বকালে ‘হিন্দু শব্দে সিন্ধুনদের অপর তীরের অধিবাসিগণকে বুঝাইত— তখন ঐ শব্দের একটা সার্থকতা ছিল । কিন্তু এখন উহা নিরর্থক হইয়া দাড়াইয়াছে—ঐ শব্দের দ্বারা এখন বর্তমান হিন্দু জাতি বা ধর্ম কিছুই বুঝাইতে পারে না, কারণ সিন্ধুনদের তীরে এখন নানাধর্মাবলম্বী নানাজাতীয় লোক বাস করে । বেদ কোন ব্যক্তিবিশেষের বাক্য নহে। বেদনিবদ্ধ ভাব রাশি ধীরে ধীরে বিকাশপ্রাপ্ত হইয়া পরিশেষে পুস্তকাকারে নিবদ্ধ হইয়াছে এবং তাহার পর সেই গ্রন্থ প্রামাণিক হইয়া দাড়াইয়াছে। অনেক ধর্মই এইরূপ গ্রন্থে নিবদ্ধ, গ্রন্থসমূহের প্রভাবও অসামান্য বলিয়া প্রতীয়মান হয় । হিন্দুদের এই বেদরাশিরূপ গ্রন্থ রহিয়াছে, তাহাদিগকে এখনও সহস্ৰ সহস্ৰ বৎসর ঐ গ্রন্থের উপর নির্ভর করিতে হইবে । তবে বেদের সম্বন্ধে আমাদের ধারণ পরিবর্তন করিতে হইবে, পর্বতদৃঢ় ভিত্তির উপর এই বেদবিশ্বাস স্থাপন করিতে হইবে । বেদরাশি বিপুল সাহিত্য। এই বেদের শতকরা ৯৯ ভাগ নষ্ট হইয়া গিয়াছে। বিশেষ বিশেষ পরিবারে এক একটি বেদাংশের চর্চা হইত। সেই পরিবারের লোপের সঙ্গে সঙ্গে সেই বেদাংশও লুপ্ত হইয়াছে। কিন্তু এখনও যাহা পাওয়া যায়, তাহাও এক প্রকাগু গ্রন্থাগারে ধরে না । এই বেদরাশি অতি প্রাচীনতম সরল—অতি সরল ভাষায় লিখিত। ইহার ব্যাকরণও এত অপরিণত যে, অনেকে মনে করেন বেদাংশবিশেষের কোন অর্থই নাই । বেদের দুইভাগ–কর্মকাণ্ড ও জ্ঞানকাণ্ড ৷ কর্মকাণ্ড বলিতে সংহিতা ও ব্রাহ্মণ বুঝায়। ব্রাহ্মণে যাগযজ্ঞের কথা আছে। সংহিতা অনুষ্ঠুপ, ত্রিষ্টপ, জগৰ্তী প্রভৃতি ছন্দে রচিত স্তোত্রাবলী—সাধারণতঃ উহাতে বরুণ বা ইন্দ্র বা অন্য কোন দেবতার স্তুতি আছে । তারপর প্রশ্ন উঠিল—এই দেবতারা কে ? এই সম্বন্ধে যেমন এক এক মতবাদ উঠিতে লাগিল, অন্যান্য মতবাদ দ্বারা আবার এই-সকল মত খণ্ডিত হইতে লাগিল ; এইরূপ অনেকদিন ধরিয়া চলিয়াছিল। প্রাচীন বাবিলনে আত্মা ছিল এই ধারণা যে, মাহুষ মরিলে তাহা হইতে । আর একটি দেহ রাহির হয়, উহার স্বাতন্ত্র্য নাই, আর মূল দেহের সহিত উহ