পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\రిశ్రీశ్రీ স্বামীজীর বাণী ও রচনা আত্মত্যাগের অভিমুখী করিয়া দেয়। তোমরা আহারের দ্বারা শরীর পুষ্ট করিতেছ, কিন্তু শরীর পুষ্ট করিয়া কি হইবে, যদি উহাকে আমরা অপরের কল্যাণের জন্য উংসর্গ করিতে না পারি ? তোমরা অধ্যয়নাদি দ্বারা মনের পুষ্টি বিধান করিতেছ –ইহাতেই বা কি হইবে, যদি অপরের কল্যাণের জন্য জীবন উংসর্গ করিতে না পারো ? কারণ সমগ্র জগং এক অখণ্ড-সত্তাস্বরূপ—তুমি তো ইহার নগণ্য ক্ষুদ্র অংশমাত্র ; স্বতরাং এই ক্ষুদ্র আমিত্বটাকে না বাড়াইয়া তোমার কোটি কোটি ভাইয়েব সেবা করাই তোমার পক্ষে স্বাভাবিক কাজ,—না করাই অস্বাভাবিক। উপনিষদের সেই মহতী বাণী কি মনে নাই ?— সর্বত: পাণিপাদং তং সৰ্বতোহক্ষিশিরোমুখম্। . সর্বত: শ্রুতিমল্লোকে সর্বমাবৃত্য তিষ্ঠতি ॥১ তোমাদিগকে ধীরে ধীরে মরিতে হইবে । মৃত্যুতেই স্বৰ্গ—মৃত্যুতেই সকল কল্যাণ প্রতিষ্ঠিত, আর ইহার বিপরীত বস্তুতে সমুদয় অকল্যাণ ও আস্বরিক ভাব নিহিত । তারপর এই আদর্শটিকে কার্যে পরিণত করিবার উপায় গুলি কি, তাহ। বুঝিতে হইবে। প্রথমত: এইটি বুঝিতে হইবে, অসম্ভব আদর্শ ধরিয়া থাকিলে চলিবে না। অতিমাত্রায় উচ্চ আদর্শ জাতিকে দুর্বল ও হীন করিয়া ফেলে। বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম-সংস্কারের পর এইটি ঘটিয়াছে । অপর দিকে আবার অতিমাত্রায় কাজের লোক’ হওয়াও ভুল। যদি এতটুকুও কল্পনাশক্তি তোমার না থাকে, যদি তোমাকে নিয়মিত করিবার একটা আদর্শ না থাকে, তবে তুমি তো একটা পশুমাত্র। অতএব আমাদিগকে আদর্শও খাটাে করিলে চলিবে না, আবার যেন আমরা কর্মকেও অবহেলা না করি। এই দুইটি অত্যন্তকে ছাড়িতে হইবে। আমাদের দেশের প্রাচীন ভাব এই—কোন গুহায় বসিয়া ধ্যান করিতে করিতে মরিয়া যাওয়া । কিন্তু এখন এই বিষয়টি ভাল করিয়!" বুঝিতে হইবে যে, আমি অপরের পূর্বে তাড়াতাড়ি মুক্তিলাভ করিব—এই ভাবটিও ভুল। মানুষ শীঘ্র বা বিলম্বে বুঝিতে পারে যে, যদি সে তাহার নিজ ভ্রাতার মুক্তির চেষ্টা না করে, তবে সে কখনই মুক্ত হইতে পারে না । তোমাদের জীবনে যাহাতে প্রবল আদর্শবাদের সহিত প্রবল কার্যকারিতা সংযুক্ত থাকে, ১ শ্বেতাশ্ব, উপ, ৩১৬