পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\Ö ግtv স্বামীজীর বাণী ও রচনা ক্ষুদ্রতর জাতিগুলিকে আত্মসাৎ করিয়া আবার শাস্ত হইতেছে—ইহাই ভারতবর্ষের ইতিহাস । í প্রকৃতির এই উন্মাদনাস্রোতের মধ্যে অন্যতম একটি প্রতিযোগী জার্তি একটি পন্থ উদ্ভাবন করিয়া আপন উন্নততর সংস্কৃতির সাহায্যে ভারতের অধিকাংশ জনগণকে আয়ত্তে আনিতে সমর্থ হইল । এই উন্নত জাতি নিজেদের ‘আৰ্য' বলিত এবং তাহদের পন্থা ছিল বর্ণাশ্রমাচার—তথাকথিত জাতিভেদ-প্রথা । আর্যজাতির জনসাধারণ অবশ্য জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে অনেকগুলি সুবিধা নিজেদের হাতে রাথিয় দিয়াছিল। তবু জাতিভেদ প্রথা চিরদিনই খুব নমনীয় ছিল ; মাঝে মাঝে নিম্নস্তরের জাতিগুলির সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্য ইহা একটু অতিরিক্ত নত হইয় পড়িত । ধনসম্পদ বা তরবারি দ্বার নয়—আধ্যাত্মিকতা দ্বারা নিৰ্যন্ত্রিত ও শোধিত বুদ্ধি দ্বারাই এই আর্যজাতি অন্তত: তত্ত্বগতভাবে সমগ্র ভারতবর্ষকে চালিত করিয়াছিল। ভারতের প্রধান জাতি আর্যদের শ্রেষ্ঠ বর্ণ—ব্রাহ্মণ । অন্যান্য দেশের সামাজিক পদ্ধতি হইতে আপাততঃ পৃথক মনে হইলেও, গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করিলে আর্যদের জাতিবিভাগপ্রথ। দুইটি ক্ষেত্র ছাড়া খুব পৃথক্ বলিয়া মনে হইবে না । প্রথমতঃ অন্য সব দেশে শ্রেষ্ঠ সম্মান লাভ করেন অস্ত্রধারী ক্ষত্রিয়েরা । রাইন-নদীর তীরবর্তী কোন অভিজাতবংশীয় দস্থ্যকে" নিজের পূর্বপুরুষরূপে আবিষ্কার করিতে পারিলে রোমের পোপ খুবই খুশী হইবেন । ভারতবর্ষে সর্বোচ্চ সম্মান লাভ করেন প্রশান্তচিত্ত পুরুষগণ—শ্রমণ, ব্রাহ্মণ, সাধক ও মহাপুরুষের । ভারতেব শ্রেষ্ঠ নরপতি অতীতের কোন অরণ্যচারী সংসারবিরাগী, সর্বস্বত্যাগী, ভিক্ষান্নজীবী, ইহকাল ও পরকালের তত্ত্বালোচনায় জীবনঅতিবাহনকারী ঋষিকে পূর্বপুরুষ বলিতে পারিলে আনন্দিত হইবেন। দ্বিতীয়তঃ মাত্রাগত পার্থক্য। অন্য সব দেশে জাতিনির্ধারণের একক মাত্র হিসাবে একজন নর বা নারীই যথেষ্ট । ধন, ক্ষমতা, বুদ্ধি বা সৌন্দর্যের দ্বারা যে-কেহ নিজ জন্মগত জাতির উর্ধ্বে যে-কোন স্তরে আরোহণ করিতে পারে। ভারতবর্ষে সমগ্র গোষ্ঠীটিই জাতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে একক-রূপে গৃহীত। ' এখানেও নিম্নজাতি হইতে উচ্চতর বা উচ্চতম জাতিতে উন্নীত হইতে পারা