পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৩৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৮২ স্বামীজীর বাণী ও রচনা কুয়াশাই শুধু ভেদ করেন নাই, অধিকন্তু দাক্ষিণাত্যের জাতিসমস্তা-সমাধানে সহায়তা করিয়াছেন । ভিক্ষার দ্বারা কেহ কখনও কিছু পায় নাই। আমরা যাহা পাইবার যোগ্য, তাহাই লাভ করিয়া থাকি ] যোগ্যতার প্রথম ধাপ পাওয়ার ইচ্ছা ; আমরা নিজেদের যাহা পাওয়াব যোগ্য বলিয়া মনে করি, তাহাই লাভ করিয়া থাকি । বিশেষতঃ দাক্ষিণাত্যবাসীদের জন্য তথাকথিত ‘আর্য’-মতবাদের জাল এবং ইহার আনুষঙ্গিক দোষগুলি শান্ত অথচ দৃঢ় সমালোচনার দ্বারা পরিশুদ্ধ করিয়া লওয়া প্রয়োজন । সেইসঙ্গে প্রয়োজন আর্যজাতির পুর্ববর্তী মহান তামিলসভ্যতা সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ ও যথার্থ গৌরববোধ । নানা পাশ্চাত্য মতবাদ সত্ত্বেও আমাদের শাস্ত্রসমূহে ‘আর্য শব্দটি যে-অর্থে দেপিতে পাই—ম্বাহ দ্বারা এই বিপুল জনসঙ্ঘকে ‘হিন্দু’ নামে অভিহিত করা হয়—সেই অর্থটিই আমরা গ্রহণ করিতেছি । এ-কথা সব হিন্দুর সম্বন্ধেই প্রযোজ্য যে, এই তাঘজাতি সংস্কৃত ও তামিল এই দুই ভাষাভাষীর সংমিশ্রণে গঠিত । কয়েকটি স্মৃতিতে যে শূদ্ৰদিগকে এই অভিধা হইতে বাদ দেওয়া হইয়াছে, তাহা দ্বার। ইহাই বুঝায় যে, ঐ শূদ্রেরা এখনও নবাগত শিক্ষার্থী মাত্র, ভবিষ্যতে উহারাও আর্যজাতিতে পরিণত হইবে । যদিও আমরা জানি যে, পণ্ডিত শবরীরয়ান কিছুটা অনিশ্চয়তার পথে বিচরণ করিতেছেন, যদিও বৈদিক নাম ও জাতিসমূহ সম্বন্ধে তাহার ক্ষিপ্ৰ মন্তব্যসমূহের সঙ্গে আমরা একমত নহি, তবুও আমরা এ-কথা জানিয়া আনন্দিত যে, তিনি ভারতীয় সভ্যতার মহান উৎস সংস্কৃতির (সংস্কৃতভাষী জাতিকে যদি সভ্যতার জনক বলা যায় ) পুর্ণ পরিচয়লাভের পথে অগ্রসর হইয়াছেন। তিনি যে প্রাচীন তামিলগণের সঙ্গে আকাদো-সুমেরীয়গণের জাতিগত ঐক্য-সম্বন্ধীয় মতবাদের উপর জোর দিয়াছেন, ইহাতেও আমরা আনন্দিত। ইহার ফলে অন্য সমুদয় সভ্যতার পূর্বে যে-সভ্যতাটি বিকশিত হইয়া উঠিয়াছিল – যাহার সহিত তুলনায় আর্য ও সেমিটক সভ্যতাদ্বয় শিশুমাত্র—সেই সভ্যতার সহিত আমাদের রক্তসম্বন্ধের কথা ভাবিয়া আমরা গৌরববোধ করিতেছি । আমরা মনে করি, মিশরবাসীদের পন্‌ট্ৰই মালাবার দেশ নয়, বরং সমগ্র মিশরীয়গণ মালাবার-তীর হইতে সমুদ্র পার হইয়। নীলনদের তীর ধরিয়া উত্তর