পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\9ఫి 8 স্বামীজীর বাণী ও রচনা নূতন আকাঙ্ক্ষা বা আদশের উদ্ভাবন তখন তাহাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না । বস্তুত: যদিও জনসাধারণকে নিজ ধর্মের আবেষ্টনীতে ধরিয়া রাখিবার জন্য তঁহাদের প্রয়াস অনেকটা ফলপ্রস্থ হইয়াছিল, এবং মুসলমানদিগের উগ্র সাম্প্রদায়িক গোড়ামিও কতকটা প্রশমিত করিতে র্তাহারা সক্ষম হইয়াছিলেন, তথাপি র্তাহারা ছিলেন নিছক আত্মসমর্থনকারী ; কোনপ্রকারে শুধু বাচিয়া থাকার অধিকার লাভ করিবার জন্যই তাহারা প্রাণপণ সংগ্রাম করিতেছিলেন। এইকালে উত্তরভারতে একজন শক্তিমান দিব্য পুরুষের আবির্ভাব হইয়াছিল । স্বজনী-প্রতিভাসম্পন্ন শেষ শিখগুরু—গুরু গোবিন্দলিংহের আধ্যাত্মিক কার্যাবলীর ফলেই শিখসম্প্রদায়ের সর্বজনবিদিত রাজনীতিক সংস্থ। গড়িয়া উঠিয়াছিল। ভারতের ইতিহাসে বরাবর দেখা গিয়াছে, যে-কোন আধ্যাত্মিক অভু্যখানের পরে, তাহারই অনুবর্তিভাবে একটি রাষ্ট্রনীতিক ঐক্যবোধ জাগ্রত হইয়া থাকে এবং ঐ বোধই আবার যথানিয়মে নিজ জনয়িত্রী যে বিশেষ আধ্যাত্মিক আকাঙ্ক্ষা, তাহাকে শক্তিশালী করিয়া থাকে । কিন্তু মহারাষ্ট্র বা শিথ সাম্রাজ্যের উত্থানের প্রাক্কালে যে আধ্যাত্মিক আকাজক্ষ জাগ্রত হইয়াছিল, তাহা ছিল সম্পূর্ণরূপে প্রতিক্রিয়াশীল । মালব কিংবা বিদ্যানগরের কথা দূরে থাকুক, মোগল-দরবারেও তদানীন্তন কালে যে-প্রতিভা ও বুদ্ধিদীপ্তির গৌরব ছিল, পুনর রাজ-দরবার কিংব লাহোরের রাজসভায় বৃথাই আমরা সে দীপ্তির অনুসন্ধান করিয়া থাকি । মানসিক উৎকর্মের দিক হইতে এই যুগই ভারতইতিহাসের গাঢ়তম তমিস্কার যুগ এবং ঐ দুই গণপ্রভ সাম্রাজ্য—ধৰ্মান্ধ গণ-অভু্যখানের প্রতিনিধিস্বরূপ ছিল, সর্ববিধ সাংস্কৃতিক উৎকর্যের তাহারা একান্ত বিরোধী ; উভয়েই মুসলমান রাজত্ব-ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গেই নিজেদের সকল প্রেরণা ও কর্মপ্রবৃত্তি হারাইয়া ফেলিয়াছিল ।. তারপর আবার এক বিশৃঙ্খলার যুগ উপস্থিত হইল। শত্রু ও মিত্র, মোগলশক্তি ও তাহার ধ্বংসকারীরা এবং তৎকাল পর্যস্ত শাস্তিপ্রিয় ফরাসী, ইংরেজ-প্রমুখ বিদেশী বণিকৃদল এক ব্যাপক হানাহানিতে লিপ্ত হইয়াছিল। প্রায় অর্ধ-শতাব্দীরও অধিক কাল যুদ্ধ লুণ্ঠন ও ধ্বংস ছাড়া দেশে আর কিছুই ছিল না। পরে সে তাণ্ডবের মলি যখন অপসারিত হইল, তখন দেখা গেল সকলের উপর জয়লাভ করিয়া সদম্ভ পদবিক্ষেপে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে—ইংরেজশক্তি । সেই শক্তির শাসনাধীনেই অর্ধশতাব্দীকাল ধরিয়া দেশে শাস্তি ও