পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘সামাজিক সম্মেলন অভিভাষণ' ○ぬぶ》 সমাজ-সংস্কারকগণকে সন্ন্যাসীদের সমালোচনা করবার শক্তি পর্যন্ত দান । করছে । বর্তমান কালে আমাদের সমাজসংস্কারকগণের বেতন ও সুবিধাগুলির তুলনায় ভিক্ষুসন্ন্যাসীরা সমাজ থেকে কি সাহায্য, কি প্রতিদান পেয়ে থাকেন ? আর সন্ন্যাসীর নীরব নি:স্বার্থ নিষ্কাম কাষের তুলনায় সমাজসংস্কারকগণ কি কাজই বা ক’রে থাকেন ? কিন্তু সন্ন্যাসীরা তো আর আধুনিকদের মতো নিজের বিজ্ঞাপন নিজে প্রচার করবার, নিজের ঢাক নিজে বাজাবার উপায়টা শেখেননি। এ জগৎটা যেন কিছুই নয়, একটা স্বপ্নমাত্র—এ ভাবটা হিন্দু মাতৃস্তন্য পানের সঙ্গে সঙ্গেই আয়ত্ত করে । এ বিষয়ে সে পাশ্চাত্যদের সঙ্গে একমত— কিন্তু পাশ্চাত্যগণ এর পরে আর কিছু দেখে না, তাই সে চার্বাকের মতো সিদ্ধান্ত ক’রে বসে, ‘যাবজ্জীবেং সুখং জীবেং । এই পৃথিবীটা একটা দুঃথপুর্ণ গহবর মাত্র, এখানে যতটুকু মুখ পাওয়া যায় ভোগ ক’রে নেওয়া যাক। হিন্দুদের দৃষ্টিতে কিন্তু ঈশ্বর ও আত্মাই একমাত্র সত্য পদার্থ —এই জগৎ যতদূর সত্য, তার চেয়েও অনন্তগুণে সত্য ; সুতরাং ঈশ্বর ও আত্মার জন্য জগৎটাকে ত্যাগ করতে হিন্দু প্রস্তুত । যতদিন সমগ্র হিন্দুজাতির মনের ভাব এইরূপ চলবে, আর আমরা ভগবৎসমীপে প্রার্থনা করি, চিরকালের জন্য এই ভাব চলুক—ততদিন আমাদের পাশ্চাত্যভাবাপন্ন স্বদেশবাসিগণ ভারতীয় নরনারীর ‘আত্মনে মোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ’ সর্বত্যাগ করবার প্রবৃত্তিকে বাধা দেবার কি আশা করতে পারেন ? {} আর সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে সেই মান্ধাতার আমলের পচা মড়ার মতে আপত্তিটা ইওরোপে প্রোটেস্ট্যান্ট সম্প্রদায় কর্তৃক প্রথম ব্যবহৃত, পরে বাঙালী সংস্কারকগণ তাদের কাছ থেকে ঐটি ধার ক’রে নিয়েছেন, আর এখন আবার আমাদের বোম্বাহবাসী ভ্রাতৃবৃন্দ সেটি অঁাকড়ে ধরেছেন—অবিবাহিত থাকার দরুন সন্ন্যাসীরা জীবনের পুর্ণ উপভোগ ও নানা রকমের অভিজ্ঞতা থেকে বঞ্চিত’। আশা করি, এইবার ঐ মড়াটা চিরদিনের জন্য আরব-সাগরে ডুবে যাবে—বিশেষতঃ এই , প্লেগের দিনে আর হয়তো ঐ স্থানের উচ্চবংশীয় ব্রাহ্মণদের তাদের পূর্বপুরুষদের পরম সৌরভময় শবদেহ্লর প্রতি প্রবল ভক্তি থাকতে পারে, A.