পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘সামাজিক সম্মেলন অভিভাষণ’ 8 o S যে কখন উন্নত জীবনলাভের চেষ্টাই করেনি, সেই কাপুরুষের সঙ্গে তুলনায় । ভ্রষ্টসন্ন্যাসী তো বীর। তুমিদের সমাজ-সংস্কারকদলের ভিতরের ব্যাপারের খবর যদি ভাল ক’রে নেওয়া যায়, তবে সন্ন্যাসী ও গৃহস্থের ভিতর ভ্ৰষ্টের সংখ্যা শতকরা কত, তা দেবতাদের ভাল ক’রে গুনতে হয় ; অব আমাদের সমুদয় কাজকর্মের এ-রকম সম্পূর্ণ পুঙ্খানুপুঙ্খ খবর যে-দেবতা রাখছেন, তিনি তো আমাদের নিজেদের হৃদয়-মধ্যেই । কিন্তু এদিকে দেখ, এ এক অদ্ভূত অভিজ্ঞতা ! একলা দাড়িয়ে রয়েছে, কারও কিছু সাহায্য চাইছে না, জীবনে যত ঝড়-ঝাপটা আসছে সব বুক পেতে নিচ্ছে—কাজ করছে, কোন পুরস্কারের আশা নেই, এমন কি কর্তব্য ব’লে লম্ব নামে সাধারণে পরিচিত, সেই পচা বিটকেল ভাবটাও নেই । সারা জীবন কাজ চলছে—আনন্দের সঙ্গে স্বাধীনভাবে কাজ চলছে—কারণ ক্রীতদাসের মতো জুতোর ঠোক্কর মেরে তাকে কাজ করাতে হচ্ছে না, অথবা মিছে মানবীয় প্রেম বা উচ্চ আকাঙ্ক্ষাও সে কার্যের মূলে নেই । এ কেবল সন্ন্যাসীই পারে । ধর্মের কথা কি বলে ? তা থাকা উচিত, না একেবারে অন্তৰ্হিত হবে ? ধর্ম যদি থাকে, তবে ধর্মসাধনে বিশেষ অভিজ্ঞ একদল লোকের আবশ্বক—ধৰ্মযুদ্ধের জন্য যোদ্ধার প্রয়োজন। সন্ন্যাসীই ধর্মে বিশেষ অভিজ্ঞ ব্যক্তি, কারণ তিনি ধর্মকেই তার জীবনের মূল লক্ষ্য করেছেন। তিনিই ঈশ্বরের সৈন্তস্বরূপ । যতদিন একদল একনিষ্ঠ সন্ন্যাসি-সম্প্রদায় থাকে, ততদিন কোন ধর্মের বিনাশশঙ্ক ? প্রোটেস্ট্যান্ট ইংলণ্ড ও আমেরিক ক্যাথলিক সন্ন্যাসীদের প্রবল প্লাবনে কম্পিত হচ্ছে কেন ? বেঁচে থাকুন রানাডে ও সমাজসংস্কারকদল ! কিন্তু হে ভারত, হে পাশ্চাত্যভাবে অনুপ্রাণিত ভারত, বংস, ভুলে না, এই সমাজে এমন সব সমস্যা রয়েছে, এখনও তুমি বা তোমার পাশ্চাত্য গুরু যার মানেই বুঝতে পারছ না, মীমাংসা করা তো দূরের কথা। م ৫-২৬