পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 о8 স্বামীজীর বাণী ও রচনা বক্তা দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রাস্ত পর্যন্ত জিজ্ঞাস ক’রে বেড়িয়েছেন, সভ্যতার সংজ্ঞা কি ? প্রশ্নটি তিনি আরও বহু দেশে জিজ্ঞাসা করেছেন । কখনও উত্তর পেয়েছেন, “আমরাই হলাম সভ্যতার মাপকাঠি ”ি তিনি সবিনয়ে জানান—শব্দটির সংজ্ঞ সম্বন্ধে তার মত অত্য রকম । কোন জাতি হয়তো প্রাকৃতিক শক্তিকে বশীভূত করতে পারে, জনহিতকর প্রয়োজনীয় সমস্যাগুলির প্রায় সমাধান ক’রে ফেলতে পারে, তথাপি এ-কথ। তাদের বোধগম্য নাও হতে পারে যে, যে-ব্যক্তি নিজেকে জয় করার শিক্ষালাভ করেছে, সেই ব্যক্তিবিশেষের মধ্যেই সর্বোৎকৃষ্ট সভ্যতা পরিস্ফুট। পৃথিবীর যে-কোন দেশের চেয়ে এই পরিবেশটি ভারতে অধিক বর্তমান, কারণ সেখানে বস্তুগত পরিবেশ আধ্যাত্মিক পরিবেশের অধীন এবং প্রত্যেকেই সকল প্রাণীর মধ্যে আত্মার প্রকাশ দেপতে সচেষ্ট এবং প্রকৃতিকেও একই ভাবে দেখে । এখানেই দেপা যায় –ভাগ্যের নির্দয় পরিহাসকে অবিচল ধৈর্যের সঙ্গে সহ করার মতো ধীর মনোভাব ; এই অবস্থায় অন্য যে-কোন জাতির চেয়ে এখানে অধিকতর আধ্যাত্মিক শক্তি ও জ্ঞানের উন্মেষ ঘটেছে। এই দেশ ও জাতির ভেতর থেকে একটি অফুরন্ত স্রোতের ধারা বয়ে চলেছে, য। দেশ-বিদেশের বহু চিন্তাশীল মাহুযের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, এরা সহজেই ঘাড় থেকে পার্থিব বোঝ। ছুড়ে ফেলে দেয় । খ্ৰীষ্টপুর্ব ২৬০ অব্দে যে প্রাচীন রাজা আদেশ করেছিলেন, ‘আর কোন রক্তপাত বা কোন যুদ্ধ করা চলবে না এবং যিনি সৈনিকের বদলে পাঠিয়েছিলেন একদল শিক্ষক, তিনি জ্ঞানীব মতে কাজই করেছিলেন, যদিও বাস্তবতার দিক থেকে দেশকে তার ফলে খুব ক্ষতিগ্রস্ত হ’তে হয়েছে। কিন্তু বল-প্রয়োগকারী বর্বর জাতিগুলির অধীনতা স্বীকার করলেও ভারতবাসীর তাপ্যাত্মিকতা চিরকাল বেঁচে আছে এবং কারও সাধ্য নেই, তা কেড়ে নেয়। নিষ্ঠুর ভাগ্যের আঘাত । সহ করার মতো খ্ৰীষ্টস্থলভ নম্রত। ভারতের মানুষের আছে, এবং সেই সঙ্গে তাদের আত্মা উজ্জ্বলতর লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলেছে। এরূপ দেশে ভাবপ্রচারের জন্য কোন খ্ৰীষ্টান মিশনরীর প্রয়োজন নেই, কারণ ভারতের ধর্ম মানুষকে ধীর, মধুর, বিবেচক এবং মনুষ্য-পশু-নির্বিশেষে ভগবানের স্বই সকল প্রাণীর প্রতি প্রীতিসম্পন্ন ক’রে তোলে। . নৈতিকতার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিংবা পৃথিবীর যে-কোন দেশ অপেক্ষ ভারত উচ্চে, মিশনরীরা