পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের রীতিনীতি 8 o (t যদি কেবল সেখানকার পবিত্র বারি পান করতে বা সেই মহান জাতির উপর বহু পবিত্র জীবমের কী অপুর্ব প্রভাব পড়েছে, তা দেখতে যান, তবেই ভাল করবেন। তারপর বক্তা বিবাহের রীতিনীতি ও প্রাচীনকালে যখন সহশিক্ষ-প্রথার প্রচলন ছিল, তখন নারীদের যে-সকল সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হ’ত, তার বর্ণনা করেন। ভারতের ঋষিদের লেখায় প্রত্যাদিষ্ট নারীর অপূর্ব চিত্র পাওয়া যায়। খ্ৰীষ্টধর্মে প্রত্যাদিষ্ট ব্যক্তিরা সকলেই পুরুষ, কিন্তু ভারতের পুতচরিত্র নারীগণ ধর্মগ্রন্থসমূহে উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার ক’রে তাছেন । গৃহস্থদের উপাসনার অঙ্গ পাঁচটি ; তার মধ্যে একটি অধ্যয়ন-অধ্যাপনা । অার একটি হ’ল মূক প্রাণীর সেবা, এই উপাসনাটি আমেরিকানদের পক্ষে বোঝা শক্ত । ইওরোপীয়দের পক্ষেও এই ভাবটি উপলব্ধি করা সহজ নয়। অন্যান্য জাতি পাইকার গবে প্রাণী তা করে এবং নিজেরাও পরস্পর হানাহানি ক’রে মরে, রক্তের সমূদ্রে তাব বাস করে । একজন ই ওরোপীয় বলেছিল, ভারতবাসীরা যে প্রাণী হত্যা করে না, তার কারণ তারা মনে কবে, প্রাণীদের মধ্যে তাদের পুর্বপুরুষের আত্মা আছে। পশুব স্তব থেকে যারা বেশী দূর অগ্রসর হয়নি, তাদের পক্ষেই এ-ধরনের যুক্তি সাঞ্জে । এটা আসলে ভারতের এক শ্রেণীর নাস্তিকের উক্তি—এ-ভাবে তারা বেদের ‘অহিংসা ও পুনর্জন্মবাদের দোষ দর্শন ক’রে থাকে । এ-রকম ধর্মীয় মতবাদ কোনকালে ষ্টিল না। এটা জড়বাদী বিশ্বাস । মূক প্রাণীর উপাসনার একটি উজ্জল চিত্র বক্তা তুলে ধরেন। ভারতের অপুর্ব বিধি, অতিথি-পরায়ণতা একটি গল্পের মাধ্যমে তিনি চিত্রিত করেন । একদা দুভিক্ষের দরুন এক ব্রাহ্মণকে—র্তার স্ত্রী, পুত্র এবং পুত্রবধূসত কিছুকাল অনাহারে কাটাতে হয়। গৃহস্বামী খাদ্যের অন্বেষণে মইরে গিয়ে সামান্য পরিমাণ ছাতু সংগ্রহ ক’রে আনেন ; বাডিতে এসে তিনি তা চার ভাগে ভাগ করেন এবং যখন সেই ছোট্ট পরিবারটি আহার করতে যাচ্ছে, এমন সময় দরজায় করাঘাত শোনা গেল। আগন্তক একজন ক্ষুধার্ত অতিথি।. ভাগ গুলি তখন অতিথির সামনে দেওয়া হ’ল এবং সে ক্ষুন্নিবৃত্তি ক’রে চলে গেল, আর এদিকে অতিথি-সেবাপরায়ণ সেই চারজন মৃত্যু বরণ করল। আতিথেয়তার পবিত্র নামে ভারতে যা আশা করা যায়, এই গল্পটি তারই আদর্শ-রূপে বলা হয়ে থাকে। .