পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাফনায় বক্তৃতা—বেদান্ত ૨૪ উপাসনা করুকু না, কোন ধর্মাবলম্বীর সহিত আমাদের বিবাদ নাই । হিন্দু বলেন, ‘এস ভাই, তোমার যে-সাহায্য আবশ্বক, তাহা আমি করিতেছি ; কিন্তু আমি আমার পথে চলিব, তাহাতে কিছু বাধা দিও না । আমি আমার ইষ্টের উপাসনা করিব । তোমার পথ খুব ভাল, তাহাতে সন্দেহ নাই, কিন্তু আমার পক্ষে হয়তো উহাতে ঘোরতর অনিষ্ট ঘটিতে পারে। কোন খাদ্য আমার শরীরের উপযোগী, তাহা আমার নিজ অভিজ্ঞতা হইতে আমিই বুঝিতে পারি, কোটি কোটি ডাক্তার সে-সম্বন্ধে আমাকে কিছু শিক্ষা দিতে পারে না । এইরূপ কোন পথ আমার উপযোগী হইবে, তাহা আমার অভিজ্ঞতা হইতে আমিই ঠিক বুঝিতে পারি -ইহাই ইষ্টনিষ্ঠ । এই কারণেই আমরা বলিয়া থাকি যে, যদি কোন মন্দিরে গিয়া অথবা কোন প্রতীক বা প্রতিমার সাহায্যে তুমি তোমার অন্তরে অবস্থিত ভগবানকে উপলব্ধি করিতে পারে, তবে তাহাই কর ; প্রয়োজন হয় দুইশত প্রতিমা গড় না কেন ? যদি কোন বিশেষ মহষ্ঠানের দ্বারা তোমার ঈশ্বর-উপলব্ধির সাহায্য হয়, তবে শীঘ্ৰ ঐ-সকল অনুষ্ঠান অবলম্বন কর । যে-কোন ক্রিয় বা অনুষ্ঠান তোমাকে ভগবানের নিকট লইয়া যায়, তাহাই অবলম্বন কর ; যদি কোন মন্দিরে যাইলে তোমার ঈশ্বরলাভের সহায়ত হয়, সেখানে গিয়াই উপাসনা কর । কিন্তু বিভিন্ন পথ লইয়া বিবাদ করিও না। যেমুহূর্তে তুমি বিবাদ কর, সেই মুহূর্তে তুমি ধর্ম পথ হইতে ভ্ৰষ্ট হইয়াছ—তুমি . সম্মুখে অগ্রস না হইয়া পিছু হটতেছ, ক্রমশ পশুস্তরে উপনীত হইতেছ। আমাদের ধর্ম কাহাকেও বাদ দিতে চায় না, উহা সকলকেই নিজের কাছে টানিয়া লইতে চায়। আমাদের জাতিভেদ ও অন্যান্য নিয়মাবলী আপাতত: ধর্মের সহিত সংস্কৃষ্ট বলিয়া বোধ হইলেও বাস্তবিক তাহা নহে। সমগ্র হিন্দুজাতিকে রক্ষা করিবার জন্য এই-সকল নিয়মের আবশ্বক ছিল । যখন এই আত্মরক্ষার প্রয়োজন থাকিবে না, তখন ঐ-গুলি আপনা হইতেই উঠিয়া যাইরে। যতই বয়োবৃদ্ধি হইতেছে, ততই এই প্রাচীন প্রথাগুলি আমার ভাল বলিয়া বোধ হইতেছে । এক সময়ে আমি ঐ-গুলির অধিকাংশই অনাবশুক ও বৃথা মনে করিতাম। কিন্তু যতই আমার বয়স হইতেছে, ততই আমি ঐ-গুলির একটিবুও বিরুদ্ধে কিছু বলিতে সঙ্কোচ বোধ করিতেছি । কারণ শত শত শতাব্দীর অভিজ্ঞতার ফলে ঐ-গুলি গঠিত হইয়াছে। গতকালের শিশু-—যে