পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের মাতুষ 8 e 4 উত্তরভারতের মাতুষকে চারটি বৃহত্তর শ্রেণীতে ভাগ করা যায়, কিন্তু উত্তরভারতের তুলনায় দক্ষিণভারতের ভাষাগুলি এতই স্বতন্ত্র যে, কোন সম্পর্কই খুজে পাওয়া যায় না। উত্তরভারতের লোকরা মহান আর্যজাতিসন্থত—য থেকে পিরেনিজ পর্বতমালার ( Pyrenees ) বাস্ক জাতি ( Basques ) এবং ফিনজাতি ( Finns ) ভিন্ন সমগ্ৰ ইওরোপের মানুষ উদ্ভূত ব’লে অনুমিত হয়। দক্ষিণ-ভারতের আদিম অধিবাসিগণ প্রাচীন মিশর বা সেমিটক জাতির সমগোত্রীয় । ভারতবর্ষে পরস্পরের ভাষা-শিক্ষার অসুবিধার কথা বোঝাতে গিয়ে স্বামীজী হলেন যে, যখন তার দক্ষিণভারতে যাবার সুযোগ হয়েছিল, তখন সংস্কৃত-জানা মুষ্টিমেয় কয়েকজনকে বাদ দিয়ে তাকে স্থানীয় অধিবাসীদের সঙ্গে ইংরেজীতেই কথা বলতে হ’ত । জাতিভেদ-প্রথার আলোচনাতেই বক্তৃতার অনেকাংশ নিয়োজিত হয়। এর বৈশিষ্ট বর্ণনা করে স্বামীজী বলেন : প্রথাটি অবশুই এখন খারাপ দিকে যাচ্ছে, পূর্বে অসুবিধার চেয়ে সুবিধাই ছিল বেশী, অপকারিতার চেয়ে উপকারিতাই ছিল বেশী । সংক্ষেপে বলা চলে, পুত্র সর্বক্ষেত্রে পিতার বৃত্তি গ্রহণ করবে----এই রীতি থেকেই এর উৎপত্তি । কালক্রমে এই বৃত্তিগত সম্প্রদায় বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং প্রত্যেক শ্রেণী নিজ নিজ গণ্ডির মধ্যে দুটবদ্ধ হয় । এই প্রথা মানুষকে যেমন বিভক্ত করেছে, তেমনি আবার সম্মিলিতও করেছে, কারণ এক শ্রেণী বা জাতিভুক্ত ব্যক্তি তার স্বজাতিকে .প্রয়োজনের সময় সাহায্য করতে দায়বদ্ধ, এবং যেহেতু কোন ব্যক্তিই তার নিজের শ্রেণী বা জাতির গণ্ডির উর্ধের্ব উঠতে পারে না, সে-জন্য অন্যান্য দেশের মাতুষের মধ্যে সামাজিক ও ব্যক্তিগত প্রাধান্য বিস্তারের যে-সংগ্রাম দেখতে পাওয়া যায়, হিন্দুদের মধ্যে তা দেখা যায় না । জাতিভেদের সবচেয়ে মন্দ দিক হ’ল এই যে, এতে প্রতিযোগিতা দমিত থাকে এবং প্রতিযোগিতার অভাবই বাস্তবিক পক্ষে ভারতের রাজনীতিক অধ:পতন ও বিদেশী জাতি কর্তৃক ভারত-বিজয়ের কারণ । বহু-আলোচিত বিবাহ-ব্যাপারে হিন্দুরা সমাজতান্ত্রিক ; সমাজের কল্যাণের কথা চিন্তা ন ক’রে যুবক-যুবতীর পরস্পরের সঙ্গে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারটা"তারা মোটেই ভাল বলে মনে করে না, কারণ যে-কোন দুটি মানুষের কল্যাণের চেয়ে সম8জর কল্যাণ অবশুই বড়, ‘আমি জেনীকে