পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হিন্দু ও খ্ৰীষ্টান । 8 » ማ করে, আমার ধর্মকে গাল দেয়, আমার দেশের সব কিছুকে মদ বলে। তারা মন্দিরের ধার দিয়ে যেতে যেতে বলে, ‘এই পৌত্তলিকের দল, তোরা নরকে যাবি !’ তারা কিন্তু মুসলমানদের একটিও কথা বলতে সাহস করে না, জানে— এখনি খাপ থেকে তলোয়ার বেরিয়ে পড়বে ! হিন্দু বড় নিরীহ, সে একটু হাসে, চলে যাবার সময় বলে যায়, ‘মূখের যা বলবার বলুক। এই হ’ল তাদের ভাব । তোমরা, যার গালাগাল দেবার জন্যে মানুষকে শিক্ষিত করে, তারা আমার সামান্য সমালোচনায় আঁতকে উঠে চীৎকার করে, ‘সন্ধুদ্দেশ্য-প্রণোদিত আমাদের ছুয়োন, আমরা আমেরিকান। আমরা দুনিয়া সুদ্ধ লোকের সমালোচনা করব, গাল দেব, শাপ দেব, যা খুশি ব’লব, কিন্তু আমাদের ছুয়োনা, আমরা বড় স্পর্শকাতর—লজ্জাবতী লতা।’ তোমরা যা খুশি করতে পারে ; আমরাও যে-ভাবে আছি, সে-ভাবেই সন্তুষ্ট আছি । একটা বিষয়ে আমরা তোমাদের থেকে ভাল আছি, আমরা আমাদের ছেলেদের এই অদ্ভূত তথ্য গেলাই না যে—পৃথিবীতে সব পবিত্র, শুধু মানুষই খারাপ ! তোমাদের ধর্মপ্রচারকেরা যখন আমাদের সমালোচনা করে, তারা যেন মনে রাখে—সমস্ত ভারতবাসী যদি দাড়িয়ে ওঠে এবং ভারত-সমুদ্রের তলায় যত মাটি আছে, সব যদি পাশ্চাত্য দেশগুলির প্রতি ছুড়তে থাকে, তা হলেও তোমরা আমাদের প্রতি যা করে থাকে, তার কোটি ভাগের এক ভাগও করা হবে না । কেন, কি জন্য ? আমরা কি কোন দিন কোথাও ধর্মপ্রচারক পাঠিয়েছি।--কাউকে ধর্মান্তরিত করবার জন্যে ? আমরা তোমাদের বলি, “তোমার ধর্মকে স্বাগত জানাচ্ছি, কিন্তু আমাকে আমার ধর্ম নিয়ে থাকতে দাও ।’ তোমরা বলে থাকো—তোমাদের ধর্ম প্রসারশীল, তোমরা আক্রমণধর্মী। কিন্তু কত জনকে নিতে পেরেছ তোমার মতে ? পৃথিবীর এক য়ঠাংশ চীনা, তারা বৌদ্ধ ; তারপর আছে জাপান, তিব্বত, রাশিয়া, সাইবেরিয়া, বর্ম, শুগম। শুনতে হয়তো ভাল লাগবে না, কিন্তু জেনে রেখো—এই যে খ্ৰীষ্টনীতি, এই ক্যাথলিক চার্চ, সবই বৌদ্ধধর্ম থেকে নেওয়া । কি ভাবে এটা হয়েছিল ? এক ফোট রক্তপাত না করে। এত ডম্ফাই তোমাদের, কিন্তু বলে তো—: তলোয়ার-ছাড়া খ্ৰীষ্টান ধর্ম কোথায় সফল হয়েছে ? সারা পৃথিবীর মধ্যে একটি জায়গা দেখাও তোঁ! খ্ৰীষ্টধর্মের ইতিহাস মন্থন ক’রে আমাকে একটি দৃষ্টান্ত দাও, আমি-ছুটি চাই না। আমি জানি—তোমাদের পুর্বপুরুষেরা কি ক’রে ¢•: ዓ