পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 Ջ Հ স্বামীজীর বাণী ও রচনা কাটে। ভারতবর্ষের প্রয়োজন খ্ৰীষ্টের কাছ থেকে সাহায্য, খ্ৰীষ্ট-বিরোধীর কাছ থেকে নয় ; এ-সকল মিশনর খ্ৰীষ্টের মতো নয়। খ্ৰীষ্টের আদর্শ অনুযুায়ী তারা আচরণ করে না ; তার বিবাহিত, ভারতে গিয়ে তারা আরামের ঘর বঁাধে এবং মুখে জীবনযাত্রা নির্বাহ করে । খ্ৰীষ্ট এবং তার শিস্যেরা ভারতে এলে প্রভূত কল্যাণ সাধন করতেন, যেমন বহু হিন্দু সাধক ক’রে থাকেন ; কিন্তু এ-সব মিশনরীর সেই চারিত্রিক পবিত্রত নেই। হিন্দুরা সানন্দে খ্ৰীষ্টানদের খ্ৰীষ্টকে স্বাগত জানাবে, কারণ র্তার জীবন ছিল পবিত্র ও সুন্দর ; কিন্তু তারা অজ্ঞ, মিথ্যাচারী ও আত্মপ্রবঞ্চক ব্যক্তিদের অনুদার উক্তিগুলি গ্রহণ করতে পারে না বা করবে না । প্রত্যেক মানুষ অপর মানুষ থেকে পৃথক । এই পার্থক্য না থাকলে মানুষের মনের অধঃপতন হ’ত । বিভিন্ন ধর্ম না থাকলে একটি ধর্মও টিকে থাকত না । খ্ৰীষ্টানের প্রয়োজন তার নিজের ধর্মের, হিন্দুরও তেমনি প্রয়োজন নিজ ধর্মের । বৎসরের পর বংসর ‘ধর্মগুলি’ পরস্পরের সঙ্গে লড়াই করেছে। যে-সকল ধর্ম গ্রন্থের উপর প্রতিষ্ঠিত, সে-গুলি আজও বেঁচে আছে । খ্ৰীষ্টানরা ইহুদীদের ধর্মাস্তরিত করতে পারলো না কেন ? কেনই বা তারা পারসীকদের খ্ৰীষ্টান করতে পারলে না ? মুসলমানদের তারা ধর্মাস্তরিত করতে পারেনি কেন ? চীন ও জাপানের উপর কোন প্রভাব বিস্তার করা সম্ভব হয়নি কেন ? বৌদ্ধ ধর্মই প্রথম প্রচারশীল ধর্ম এবং বৌদ্ধদের সংখ্যা যে-কোন ধর্মাবলম্বীর সংখ্যার দ্বিগুণ । তারা তরবারির সাহায্যে প্রচার করেনি। মুসলমানরা সবচেয়ে বেশী হিংসার পথ অবলম্বন করেছে। তিনটি বৃহৎ প্রচারশীল ধর্মের মধ্যে তাদের । সংখ্যাই সবচেয়ে কম। মুসলমানদেরও একসময় প্রতিপত্তির দিন এসেছিল । প্রতিদিনই শোনা যায়—খ্ৰীষ্টান-জাতি রক্তপাতের দ্বারা দেশ অধিকার করছে। কোন মিশনরী এর প্রতিবাদে একটা কথা বলেছে ? অতি রক্তপিপাস্ক জাতিগুলি কেন এমন একটি ধর্মকে গৌরবান্বিত করবে, যা কখনও খ্ৰীষ্টের ধর্ম নয় ? ইহুদী ও আরবেরাই ছিল খ্ৰীষ্টধর্মের জন্মদাতা ; খ্ৰীষ্টানেরা তাদের কিভাবেই না নির্যাতন করেছে । ভারতে খ্ৰীষ্টানদের যাচাই করা হয়ে গেছে এবং ওজনে তার কম পড়েছে। আমি কঠোর বাক্য প্রয়োগ করতে চাই না, অপরে তাদের কি চোখে দেখে, খ্ৰীষ্টানদের তাই দেখাতে চাই । যে-সকল মিশনরী নরকের আগুনের কথা প্রচার কধুে, সকলে তাদের ভয়ের চোখে