পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতের নারী 8Wうむ আমি এই নারীটিকে বিবাহ করিব। কেন ? আমি তাহাকে পছন্দ করি। এই নারী আমাকে বিবাহ করিয়াছে। কেন ? সে আমাকে পছন্দ করে। এইখানেই ইহর পরিসমাপ্তি। এই অনন্ত ব্ৰহ্মাণ্ডে সে আর আমি—এই দুইজনেই আছি, আমি তাহাকে এবং সে আমাকে বিবাহ করিয়াছে। ইহাতে কাহারও কোন ক্ষতি নাই, আর কাহারও কোন দায়িত্ব নাই। আপনাদের শ্ৰীমান ও শ্ৰীমতীর বনে গিয়া তাহদের রুচিমত জীবন যাপন করিতে পারে । কিন্তু তাহাদের যখন সমাজে বাস করিতে হয়, তখন তাহদের বিবাহ আমাদের শুভাশুভের সহিত জড়িত একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তাহাদের সন্তানগণ অগ্নিসংযোগকারী, হত্যাকারী দস্থ্য, পরস্বাপহারী, মদ্যপ, জঘন্যাচারী ও ক্র রকর্ম—সাক্ষাৎ দানব হইতে পারে। এখন ভারতবর্ষের সমাজ-ব্যবস্থার ভিত্তি কি ? ইহা বর্ণভিত্তিক বিধান । আমার জন্ম—বর্ণ বা জাতির জন্য, তাহার জন্যই আমার জীবন । অবশ্য আমার নিজের কথা বলিতেছি না । সন্ন্যাস গ্রহণ করিবার ফলে আমরা জাতি-বর্ণের বহির্ভূত। যাহারা সমাজে বাস করে, আমি তাহাদের কথা বলিতেছি । কোন বর্ণে জন্ম বলিয়া সেই বর্ণের ধর্মাতুযায়ী আমাকে সমস্ত জীবন যাপন করিতেই হইবে। অর্থাৎ আপনাদের দেশের আধুনিক ভাষায় বলিতে গেলে বলিতে হয়, পাশ্চাত্য মানব আজন্ম স্বাতন্ত্রাবাদী, আর হিন্দু সমাজতান্ত্রিক, পুরাপুরি সমাজতান্ত্রিক । সেইজন্য শাস্ত্র বলে যে, যদি পুরুষকে তাহার মনের মতো যে-কোন নারীকে বিবাহ করিবার স্বাধীনতা দেওয়া হয় এবং নারীকেও তাহার মনের মতো যে-কোন পুরুষকে বিবাহ করিবার স্বাধীনতা দেওয়া হয়, তখন কি হয় ? তুমি প্রেমে পড়। মেয়েটির পিতা হয়তো উন্মাদ বা যক্ষারোগী। মেয়েটি হয়তো একটি পাড়-মাতাল ছেলের মুখ দেখিয়া মুগ্ধ হইল । সমাজবিধি কি বলে ? ধর্মের অনুশাসনে এই-সব বিবাহ অবৈধ। মদ্যপায়ী, ক্ষয়রোগী, উন্মাদ প্রভৃতির সস্তানদিগকে বিবাহ করিতে দেওয়া হইবে না। ধর্ম বলে, বিকলাঙ্গ কুজ বিকৃতবুদ্ধি জড়বৎ ব্যক্তিদের বিবাহ একেবারে নিষিদ্ধ। । কিন্তু মুসলমানরা আরব হইতে ভারতবর্ষে আসিল, তাহাদের আছে আরবী আইনু, আর আরবের মরুভূমির আইন আমাদের উপর জোর করিয়া চাপানো হইল। ইংরেজরা আসিল তাঁহাদের আইন লইয়। তদুর সাধ্য তাহাও