পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৪৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8盤求 স্বামীজীর বাণী ও রচনা t বঙ্গের উচ্চবর্ণেরা ত্যাগ ভালবাসেন না, তাহাদের ঝোক ভোগের দিকে । র্তাহারা কেমন করিয়া আধ্যাত্মিক বিষয়ে গভীর অন্তদৃষ্টি লাভ করিবেন ? ‘ত্যাগেনৈকে অমৃতত্বমানগু: অন্য প্রকার কিরূপে সম্ভব ? • . অপর দিকে ক্রমান্বয়ে অনেক মৃদুরবিস্তারি-প্রভাবসম্পন্ন মহা মহা ত্যাগী আচার্যগণ সমৃদয় হিন্দীভাষী ভারতের মধ্যে বেদান্তের মত প্রতি গৃহে প্রবিষ্ট করাইয়া দিয়াছেন। বিশেষতঃ পঞ্জাবকেশরী রণজিৎ সিংহের রাজত্বকালে ত্যাগের যে মহিমা প্রচারিত হয়, তাহাতে অতি নিম্নশ্রেণীর লোকেও বেদাস্তদর্শনের উচ্চতম উপদেশ পর্যন্ত শিক্ষা পাইয়াছে । যথোচিত গর্বের সহিত পঞ্জাবের কৃষকবালিক বলিয়া থাকে, তাহার চরক পর্যন্ত সোহহম্ সোহহম’ ধ্বনি করিতেছে । আর আমি হৃষীকেশের জঙ্গলে সন্ন্যাসিবেশধারী ত্যাগী মেথরদিগকে বেদান্ত পাঠ করিতে দেখিয়াছি । অনেক গর্বিত অভিজাত ব্যক্তিও তাহাদের পদতলে বসিয়া আনন্দের সহিত উপদেশ পাইতে পারেন। কেনই বা না এইরূপ হইবে ? ‘অন্ত্যাদপি পরং ধর্মং—নীচ জাতির নিকট হইতেও শ্রেষ্ঠ ধর্ম গ্রহণ করিবে । অতএব উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও পঞ্জাববাসীরা বঙ্গদেশ, বোম্বাই ও মাদ্রাজের অধিবাসিগণ অপেক্ষ ধর্মবিষয়ে অধিক শিক্ষিত। দশনামী, বৈরাগী, পন্থী প্রভৃতি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ত্যাগী পরিব্রাজকগণ প্রত্যেকের দ্বারে দ্বারে ধর্মভাব লইয়া যাইতেছেন ; মূল্য এক টুকরা রুটিমাত্র। আর তাহাদের মধ্যে অনেকে কি মহৎ ও নিঃস্বাৰ্থচরিত্র! স্বাধীন বা কাচপন্থী সম্প্রদায়ের ( যাহারা নিজেদের কোন সম্প্রদায়ের অস্তভুক্ত মনে করেন না ) একজন সন্ন্যাসী আছেন। তাহারই চেষ্টায় সমগ্র রাজপুতানায় শত শত বিদ্যালয় ও দাতব্য আশ্রম স্থাপিত হইয়াছে। তিনি জঙ্গলের ভিতর হাসপাতাল খুলিয়াছেন, হিমালয়ের দুর্গম গিরিনদীর উপরে লৌহসেতু নির্মাণ করাইয়াছেন, কিন্তু তিনি কখন মুদ্রা স্পর্শ করেন না ; তাহার একখানি কম্বল ছাড়া সাংসারিক সম্বল আর কিছুই নাই, এইজন্য তাহাকে লোকে ‘কম্বলী স্বামী বলিয়া ডাকে—তিনি দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করিয়া আহার সংগ্ৰহ করেন । র্তাহাকে কখন একাদিক্রমে একই বাড়িতে পুরা ভিক্ষা করিতে দেখি নাই, পাছে গৃহস্থের কোন ক্লেশ হয়। আর এরূপ সাধু—তিনি এক। 鄭 পাঠান্তর : 'ভাগেনৈকেন-তাগের দ্বারাই অমৃতত্ব অর্থাৎ মুক্তি লাভ করা যায়।