পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামেশ্বর-মন্দিরে বক্তৃত৷ ৩৭ পুনরায় বলুিতেছি, তোমাদিগকে শুদ্ধচিত্ত হইতে হইবে, এবং যে-কেহ তোমার নিকটে আসিয়া উপস্থিত হয়, যথাসাধ্য তাহার সেবা করিতে হইবে । এইভাবে পরের সেবা শুভ কর্ম | এই সংকর্মবলে চিত্ত শুদ্ধ হয় এবং সকলের ভিতরে যে শিব রহিয়াছেন, তিনি প্রকাশিত হন। তিনি সকলেরই হৃদয়ে বিরাজ করিতেছেন। যদি দর্পণের উপর ধূলি ও ময়লা থাকে, তবে তাহাতে আমরা আমাদের চেহারা দেখিতে পাই না। আমাদের হৃদয়-দৰ্পণেও এইরূপ অজ্ঞান ও পাপের ময়লা রহিয়াছে । সবচেয়ে বড় পাপ এই স্বার্থপরতা—আগে নিজের ভাবনা ভাবা । যে মনে করে, আমি আগে খাইব, আমি অপরের চেয়ে অধিক ঐশ্বর্যশালী স্থষ্টব, আমি সর্বসম্পদের অধিকারী হইব ; যে মনে করে, আমি অপরের আগে স্বর্গে যাইব, আমি অপরের আগে মুক্তিলাভ করিব, সে ব্যক্তিই স্বার্থপর । স্বর্থশূন্য ব্যক্তি বলেন, আমি সকলের আগে যাইতে চাই না, সকলের শেষে ঘাইল ; আমি স্বর্গে যাইতে চাই না—যদি আমার ভ্রাতৃবধুকে সাহায্য করিবার জন্য নরকে যাইতে হয়, তাহাতেও প্রস্তুত আছি। কেহ ধাৰ্মিক কি অধাৰ্মিক পরীক্ষা করিতে হইলে দেখিতে হইবে, সে ব্যক্তি কতদূর নিঃস্বার্থ। যে অধিক নিঃস্বাগ, সে-ই তাধিক ধামিক ! সে-ই শিবের সামীপ্য লাভ করে । সে পণ্ডিতই হউক, মূৰ্খই হউক, সে শিবের বিষয় কিছু জালুক বা না জাহুক, সে অপর ব্যক্তি অপেক্ষ শিবের অধিকতর নিকটবতী । তার যদি কেহ স্বার্থপর হয়, সে যদি পৃথিবীতে যত দেবমন্দির আছে, সব দেখিয়া থাকে, সব তীর্থ দৰ্শন করিয়া থাকে, সে যদি চিতাবাঘের মতে সাজিয়া বসিয়া থাকে, তাহা হইলেও সে শিব হইতে অনেক দূরে অবস্থিত।