পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8や স্বামীজীর বাণু ও রচনা সম্প্রদায়ের যদি তুলনা করা যায়, তবে আমার বিশ্বাস—সমবেত শ্রোতৃবর্গ সকলে একমত হইয়া প্রথমোক্ত সম্প্রদায়েরই পক্ষপাতী হইবেন । কারণ এই প্রাচীন সম্প্রদায়ের উন্নতির কতকটা আশা করিতে পারা যায়—তাহার একটা অবলম্বন আছে, জাতীয় মূলমন্ত্র তাহার প্রাণে জাগিতেছে, সুতরাং তাহার বাচিবার আশা আছে ; শেষোক্ত সম্প্রদায়ের কিন্তু মৃত্যু অবশুম্ভাবী ; যেমন ব্যক্তিগত ভাবে বলা চলে—যদি মর্মস্থানে কোন আঘাত না লাগিয়া থাকে, জীবনের গতি যদি অব্যাহত থাকে, তবে অন্য কোন অঙ্গে যতই আঘাত লাগুক না, তাহাকে সাংঘাতিক বলা হয় না, কারণ অন্যান্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা তাহাদুর ক্রিয়। জীবনধারণের পক্ষে অত্যাবশ্বক নহে ; সেইরূপ মর্মস্থানে আঘাত না লাগিলে আমাদের জাতির বিনাশের কোন আশঙ্কা নাই । সুতরাং এইটি বেশ স্মরণ রাখিবে, তোমরা যদি ধর্ম ছাড়িয়া দিয়া পাশ্চাত্যজাতির জডবাদ-সর্বস্ব সভ্যতার অভিমুখে ধাবিত হও, তোমর তিন পুরুষ ঘাইতে না যাইতেই বিনষ্ট হইবে । ধর্ম ছাড়িয়া দিলে হিন্দুর জাতীয় মেরুদণ্ডই ভাঙিয়া যাইবে—যে ভিত্তির উপর জাতীয় সুবিশাল সেীপ নির্মিত হইয়াছিল, তাহাই ভাঙিয়া যাইবে ; সুতরাং ফল দাড়াইবে –সম্পূর্ণ ধ্বংস । অতএব হে বন্ধুগণ, ইহাই আমাদের জাতীয় উন্নতির পথ—আমাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষগণের নিকট হটতে আমরা যে অমূল্য ধৰ্মসম্পদ উত্তরাধিকারস্থত্রে পাইয়াছি, তাহাকে প্রাণপণে ধরিয়া থাকাই আমাদের প্রথম ওঁ প্রধান কর্তব্য । তোমরা কি এমন দেশের কথা শুনিয়াছ, যে দেশে বড় বড় রাজার নিজদিগকে প্রাচীন রাজগণের অথবা পুরাতন-দুর্গনিবাসী, পথিকদের সর্বস্বলুণ্ঠনকারী দস্থ্যব্যারনগণের বংশধর বলিয়। পরিচয় দিতে গৌরববোধ না করিয়া অরণ্যবাসী অর্ধন মুনিঋষির বংশধর বলিয়া নিজেদের পরিচয় দিতে গৌরবান্বিত মনে করেন ? তোমরা কি এমন দেশের কথা শুনিয়াছ ? যদি না শুনিয়া থাকে, শোন —আমাদের মাতৃভূমিই সেই দেশ। অন্যান্য দেশে বড় বড় ধর্মাচার্যগণ নিজেদের কোন প্রাচীন রাজার বংশধর বলিয়া প্রতিপন্ন করিতে চেষ্টা করেন, এখানে বড় বড় রাজারা নিজেদের কোন প্রাচীন ঋষির বংশধর বলিয়া প্রমাণ করিতে সচেষ্ট। এই কারণেই আমি বলিতেছি, তোমরা ধর্মে বিশ্বাস কর বা নাই কর, যদি জাতীয় জীবনকে অব্যাহত রাখিতে চাও, তবে তোমাদিগকে এই ধৰ্মরক্ষায় সচেষ্ট হইতে হইবে। এক হস্তে দৃঢ়ভাবে ধর্মকে ধরিয়া অপর হস্ত প্রসারিত