পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কুম্ভকোণু বক্তৃতা סף উপাস্যরূপে গ্রহণ করিতে পারো ; এমন কি তাহাকে সকল অবতারের মধ্যে শ্ৰেষ্ঠ মনে করিতে পারে, তাহাতে কোন ক্ষতি নাই ; কিন্তু সনাতন তত্ত্বসমূহই যেন তোমার ধর্মসাধনের মূলভিত্তি হয়। এই বিষয়টি বিশেষভাবে লক্ষ্য করিলে আশ্চর্য হইবে—যে-কোন অবতারই হউন না কেন, বৈদিক সনাতন তত্ত্বসমূহের জীবস্ত উদাহরণস্বরূপ বলিয়াই তিনি আমাদের মান্য । শ্রীকৃষ্ণের মাহাত্ম্য এই যে, তিনি সনাতন ধর্মের শ্রেষ্ঠ প্রচারক এবং বেদান্তের সর্বোৎকৃষ্ট ব্যাখ্যাত । পৃথিবীর সকলেরই বেদাস্তের চর্চা করা কেন উচিত, তাহার প্রথম কারণ এই যে, বেদান্তই একমাত্র সার্বভৌম ধর্ম। দ্বিতীয় কারণ, জগতে যত শাস্ত্র আছে, তন্মধ্যে কেবল বেদাস্তের উপদেশের সহিত বহিঃপ্রকৃতির বৈজ্ঞানিক অতুসন্ধানে লব্ধ জ্ঞানের পূর্ণ সামঞ্জস্য আছে । অতি প্রাচীনকালে আকৃতি, বংশ ও ভাবের দিক হইতে সমতুল্য দুইটি বিভিন্ন জাতি বিভিন্ন পথে জগতের তত্ত্বানুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইয়াছিল। আমি প্রাচীন হিন্দু ও প্রাচীন গ্রীকজাতির কথা বলিতেছি । শেষোক্ত জাতি বাহা জগতের বিশ্লেষণ করিয়া সেই চরম লক্ষ্যের অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হইয়াছিল এবং প্রথমোক্ত জাতি অগ্রসর হইয়াছিল অস্তর্জগৎ বিশ্লেষণ করিয়া । আর তাহদের এই বিশ্লেষণের ইতিহাসের বিভিন্ন অবস্থা আলোচনা করিলে দেখা যায়, এই দুই ভিন্ন প্রকার চিন্তাপ্রণালী সেই সুদুর চরমলক্ষ্যের একই প্রকার প্রতিধ্বনি করিয়াছে। ইহাতে স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে, কেবল বেদান্তীই—যাহারা নিজেদের হিন্দু বলিয়া পরিচয় দিয়া থাকে, তাহাদের ধর্মের সহিত সামুগ্ধস্ত করিয়া আধুনিক জড়বিজ্ঞানের সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করিতে পারে ; ইহাতে বেশ স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে, বর্তমান জড়বাদ নিজের সিদ্ধান্তগুলি পরিত্যাগ না করিয়া কেবল বেদান্তের সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করিলেই আধ্যাত্মিকতার দিকে অগ্রসর হইতে পারে । আমাদের নিকট এবং যাহারা এই বিষয়ের বিশেষ আলোচনা করিয়াছেন, তাহদেরও নিকট ইহা স্পষ্টই বোধ হইতেছে যে, আধুনিক বিজ্ঞান যে-সকল সিদ্ধান্তে উপনীত হইতেছে, বেদান্ত অনেক শতাব্দী পুর্বেই সেই-সকল সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছিল ; কেবল আধুনিক বিজ্ঞানে সেগুলি জড়শক্তিরূপে উল্লিখিত হইতেছে মাত্র । আধুনিক পাশ্চাত্য জাতিগণের পক্ষে বেদান্তের আলোচনার দ্বিতীয় হেতু— ইহার অদ্ভূত যুক্তিসিদ্ধতা। আমাকে পাশ্চাত্যদেশের অনেক ভাল ভাল