পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কর্তব্য কি ? কর্মযোগের তত্ত্ব বুঝিতে হইলে আমাদের জানা অবিগুক, কর্তব্য কাহাকে বলে । আমাকে যদি কিছু করিতে হয়, তবে প্রথমেই জানিতে হুইবে—ইহা অামার কর্তব্য, তবেই তাহা করিতে পারিব। কর্তব্য-জ্ঞান জাবার বিভিন্ন জাতির মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন। মুসলমান বলেন, তাহার শাস্ত্র কোরানে যাহা লিখিত আছে, তাহাই তাহার কর্তব্য। হিন্দু বলেন, তাহার বেদে যাহা আছে, তাহাই তাহার কর্তব্য । খ্ৰীষ্টান আবার বলেন, তাহার বাইবেলে যাহা আছে, তাহাই উহার কর্তব্য। সুতরাং আমরা দেখিলাম, জীবনের বিভিন্ন অবস্থায়, ইতিহাসের বিভিন্ন যুগে ও বিভিন্ন জাতির ভিতরে কর্তব্যের ভাব ভিন্ন ভিন্ন। অন্যান্য সার্বভৌম-ভাববোধক শব্দের ন্যায় ‘কর্তব্য’ শব্দেরও স্পষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া অসম্ভব। কর্মজীবনে উহার পরিণতি ও ফলাফল জানিয়াই আমরা উহার সম্বন্ধে একট। ধারণা করিতে পারি। যখন আমাদের সম্মুখে কতকগুলি ঘটনা ঘটে, তখন আমাদের সকলেরই সেগুলি সম্বন্ধে কোন বিশেষভাবে কার্ধ করিবার জন্ত স্বাভাবিক অথবা পূর্বসংস্কার অনুযায়ী ভাবের উদয় হয়। সেই ভাবের উদয় হইলে মন সেই পরিবেশ সম্বন্ধে চিস্ত করিতে আরম্ভ করে। কখন মনে হয়, এরূপ অবস্থায় এইভাবে কর্ম করাই সঙ্গত, জাবার অন্ত সময়ে ঠিক সেইরূপ অবস্থা হুইলেও সেভাবে কর্ম করা অন্যায় বলিয়া মনে হয়। সর্বত্রই কর্তব্যের এই সাধারণ ধারণা দেখা যায় যে, প্রত্যেক সৎ ব্যক্তিই নিজ বিবেকের আদেশ অনুযায়ী কর্ম করিয়া থাকেন। কিন্তু বিশেষ কোন গুণ কর্মকে কর্তব্যে পরিণত করে ? যদি একজন খ্ৰীষ্টান সম্মুখে গোমাংস পাইয়া নিজের প্রাণরক্ষার জন্ত আহার না করে অথবা অপরের প্রাণরক্ষার জন্য তাহাকে না দেয়, তাহা হইলে সে নিশ্চয় বোধ করিবে যে, তাহার কর্তব্যে অবহেল৷ হইয়াছে। কিন্তু একজন হিন্দু যদি ঐৰূপ ক্ষেত্রে উহ। ভোজন করিতে সাহস করে অথবা অপর হিন্দুকে উহা খাইতে দেয়, সেও নিশ্চয় সমভাবে বোধ করিৰে যে, তাহার কর্তব্য পালন করা হইল না। হিন্দুর শিক্ষা ও সংস্কার তাহার হৃদয়ে ঐক্কপ ভাব আনিয়া দিবে। গত শতাব্দীতে ভারতে ঠগ নামে কুখ্যাত