পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কর্তব্য কি ? . Q\o পিতামাতার হাত-পা ধোয়াইয়া দিল, র্তাহাদিগকে খাওয়াইল, সর্বপ্রকারে তাহাজের সন্তোষবিধান করিল। তারপর সন্ন্যাসীর নিকট আসিয়া একটি আসনে উপবেশন করিয়া বলিল, “আপনি আমাকে দেখিতে আসিয়াছেন, বলুন—অামি আপনার কি করিতে পারি ? তখন সন্ন্যাসী তাহাকে আত্মা ও পরমাত্মা সম্বন্ধে কতকগুলি প্রশ্ন করিলেন, তাহার উত্তরে ব্যাধ যে উপদেশ দিল, মহাভারত-গ্রন্থের অংশরূপে তাহ ‘ব্যাধগীতা’ নামে প্রসিদ্ধ। এই ব্যাধগীত। চূড়ান্ত বেদান্ত—দর্শনের চরম সীমা। তোমরা ভগবদগীতার নাম শুনিয়াছ, উহা শ্ৰীকৃষ্ণের উপদেশ । ভগবদগীত। পাঠ শেষ করিয়া তোমাদের এই ব্যাধগীতা পাঠ করা উচিত। ইহা বেদান্ত-দর্শনের চূড়ান্ত ভাব। ব্যাধের উপদেশ শেষ হইলে সন্ন্যাসী অতিশয় বিস্মিত হইলেন এবং বলিলেন, “আপনার এত উচ্চ জ্ঞান, তথাপি আপনি এই ব্যাধদেহ অবলম্বন করিয়া এরূপ কুৎসিত কর্ম করিতেছেন কেন ? তখন ব্যাধ উত্তর করিল, ‘বৎস, কোন কর্মই অসৎ নয়, কোন কর্মই অপবিত্র নয়। এই কার্য আমার জন্মগত, ইহা আমার প্রারব্ধ-লব্ধ। আমি বাল্যকালে এই ব্যবসায় শিক্ষা করি। অনাসক্তভাবে আমি আমার কর্তব্যগুলি ভালভাবে করিবার চেষ্টা করি ; আমি গৃহস্থের ধর্ম পালন করি ও পিতামাতাকে যথাসাধ্য স্বর্থী করিবার চেষ্টা করি। আমি যোগ জানি না এবং সন্ন্যাসীও হই নাই । আমি কখনও সংসার ত্যাগ করিয়া বনে যাই নাই। তথাপি সমাজে আমার অবস্থা অনুযায়ী কর্তব্য অনাসক্তভাবে করিয়াই আমার এই জ্ঞান জন্মিয়াছে।’ ভারতে এক জ্ঞানী মহাপুরুষ আছেন, তিনি উচ্চ অবস্থার যোগী।” আমি জীবনে যে-সব অতি বিস্ময়কর মানুষ দেখিয়াছি, ইনি তাহাদের একজন। ইনি এক অসাধারণ ব্যক্তি ; কখনও কাহাকেও উপদেশ দেন না ; কেহ কোন প্রশ্ন করিলে তিনি তাহার উত্তর দিবেন না। আচার্যের পদ গ্রহণ করিতে তিনি অত্যস্ত সঙ্কুচিত—কখনও উহা গ্রহণ করিবেন না। র্তাহাকে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিয়া কিছুদিন অপেক্ষা করিতে হইবে, কথাবার্তার মধ্যে তিনি নিজেই সে বিষয় উত্থাপন করিবেন এবং ঐ তত্ত্ব ১ গাজিপুরের পওহারী বাবা, ১৮৯৮ খৃঃ ইনি দেহরক্ষা করেন।