পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S. e૨ স্বামীজীর বাণী ও রচনা একজন গরীব লোকের কিছু অর্থের প্রয়োজন ছিল। সে শুনিয়াছিল ষে, কোনরূপে একটি ভূতকে বশীভূত করিতে পারিলে তাহাকে আজ্ঞা করিয়া সে অর্থ বা যাহা কিছু চায়, সবই পাইতে পারে। অতএব সে একটি ভূত সংগ্ৰহ করিবার জন্য বড় ব্যস্ত হইয়া পড়িল । তাহাকে ভূত দিতে পারে এমন একটি লোক খুজিয়া বেড়াইতে লাগিল ; অবশেষে মহা-যোগৈশ্বৰ্যসম্পন্ন এক সাধুর সহিত তাহার দেখা হইল। সে ঐ সাধুর সাহায্য প্রার্থনা করিল। সাধু বলিলেন, ‘ভূত লইয়া তুমি কি করিবে ? সে বলিল, “আমার একটি ভূত চাই। সে আমার হইয়া কাজকর্ম করিবে। কিরূপে একটি ভূত পাইব তাহার উপায় শিখাইয়া দিন, একটি ভূত আমার বিশেষ প্রয়োজন। সাধু বলিলেন, “অত বিক্ষুব্ধ হইও না, বাড়ি যাও। পরদিন সে পুনরায় সাধুর নিকট গিয়া কাদিয়া কাটিয়া বলিতে লাগিল, “আমাকে একটি ভূত দিন । কাজে সাহায্য করিবার জন্য একটি ভূত আমার চাই-ই চাই।’ অবশেষে সাধুটি বিরক্ত হইয়া বলিলেন, ‘এই যাদুমন্ত্র লও ; ইহা জপ করিলে একটি ভূত আসিবে—তাহাকে যাহা আদেশ করিবে, সে তাহাষ্ট করিবে । কিন্তু সাবধান, ভূত বড় ভয়ানক প্রাণী—তাহাকে অবিরত কাজে ব্যস্ত রাখিতে হয় ; তাহাকে কাজ দিতে না পারিলে সে তোমার প্রাণ লইবে ।’ লোকটি বলিল, “ইহা তো অতি সহজ ব্যাপার, আমি তাহাকে তাহার জীবনব্যাপী কর্ম দিতে পারি।” এই বলিয়া সে এক বনে গিয় অনেক দিন ধরিয়া ঐ মন্ত্রটি জপ করিতে লাগিল ; অবশেষে তাহার সম্মুখে এক বিরাট ভূত আসিয়া উপস্থিত হইল এবং বলিল, “আমি ভূত—আমি তোমার মন্ত্রবলে বশীভূত হইয়াছি ; কিন্তু আমাকে সর্বদা কাজে নিযুক্ত রাখিতে হইবে। যে মুহূর্তে কাজ দিতে না পরিবে, সেই মুহূর্তে তোমাকে সংহার করিব।” লোকটি বলিল, “আমার জন্য একটি প্রাসাদ নির্মাণ করিয়া দাও। ভূত বলিল, “হা, প্রাসাদ নিমিত হইয়াছে।’ লোকটি বলিল, “টাক। আনো।’ ভূত বলিল, “এই লও টাকা।’ লোকটি বলিল, “এই বন কাটিয়া এখানে একটি শহর তৈরি কর। ভূত বলিল, তাহাও হইয়াছে। আর কিছু করিতে হইবে ? তখন লোকটির ভয় হইল ; সে ভাবিতে লাগিল,—“ইহাকে তো আর কোন কাজ দিবার নাই, এ তে দেখিতেছি, এক মুহুর্তে সব সম্পন্ন করে ? ভূত বলিল, “আমাকে কিছু কাজ দাও, নইলে তোমায় খাইয়।