পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> &br স্বামীজীর বাণী ও রচনা অল্প শক্তি নিয়োগ করিয়া অধিক ফল লাভ করিবার প্রণালী রহস্য ও উপাত্র দেখাইয়া দেয় কর্মযোগ । কর্মযোগ কি বলে ?—বলে, ‘নিরস্তর কর্ম কর, কিন্তু কর্মে আসক্তি ত্যাগ কর । কোন কিছুর সহিত নিজেকে জড়াইও না। মনকে মুক্ত রাখে। যাহা কিছু দেখিতেছ, দুঃখ-কষ্ট—সবই জগতেব অপরিহার্য পরিবেশ মাত্র , দারিদ্র্য ধন ও স্থখ ক্ষণস্থায়ী, উহার মোটেই আমাদের স্বভাবগত নয় । আমাদের স্বরূপ দুঃখ ও স্বখের পারে—প্রত্যক্ষ বা কল্পনার অতীত ; তথাপি আমাদিগকে সর্বদাই কর্ম করিয়া যাইতে হইবে । ‘আসক্তি হইতেই দুঃখ আসে, কর্ম হইতে নয়।’ যখনই আমরা কর্মের সহিত নিজেদের অভিন্ন করিয়া ফেলি, তখনত আমরা দুঃখ বোধ করি, কিন্তু কর্মের সহিত ঐরুপ এক না হইয়া গেলে সেই দুঃখ অনুভব করি না। কাহারও একখানি স্বন্দর ছবি পুডিয়া গেলে সাধারণতঃ অপব একজনের কোন দুঃখ হয় না, কিন্তু যখন তাহার নিজের ছবিখানি পুডিয়া যায়, তখন সে কত দুঃখ বোধ করে ! কেন ? দুইখানিষ্ট সুন্দর ছবি, হয়তো একই মূলছবির নকল, কিন্তু একক্ষেত্র অপেক্ষা অন্তক্ষেত্রে অতি দারুণ দুঃখ অনুভূত হয় । ইহার কারণ–একক্ষেত্রে মানুষ ছবির সহিত নিজেকে অভিন্ন করিয়া ফেলিয়াছে, অপর ক্ষেত্রে তাহ করে নাই। এই ‘আমি ও আমার ভাবই সকল দুঃখের কারণ। অধিকারের ভাব হইতেই স্বার্থ আসে এবং ঐ স্বার্থপরতা হইতেই দুঃখ আরম্ভ। প্রতিটি স্বার্থপর কার্য প। চিন্তা আমাদিগকে কোন-না-কোন বিষয়ে আসক্ত করে, এবং আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেই বস্তুর দাস হইয়া যাই । চিত্তের যে-কোন তরঙ্গ হইতে ‘আমি ও আমার ভাব উখিত হয়, তাহ তৎক্ষণাৎ আমাদিগকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করিয' ক্রীতদাসে পরিণত করে, যতই আমরা ‘আমি ও অামার’ বলি, ততঃ দাসত্ব বাড়িতে থাকে, ততই দুঃখও বাড়িতে থাকে। অতএব কর্মযোগ বলে—জগতে যত ছবি আছে, সবগুলির সৌন্দর্য উপভোগ কর, কি থ কোনটির সহিত নিজেকে এক করিয়া ফেলিও না ; ‘অামার’ কখনও বলিও না । আমরা যখনই বলি, ‘এটি আমার’, তখনই সঙ্গে সঙ্গে দুঃখ আসিবে। ‘আমার সন্তান’—এ-কথা মনে মনেও বলিও না ; ছেলেকে আদর ক4, তাহাকে নিজ আয়ত্তে রাখে, কিন্তু ‘আমার’ বলিও না। আমার বলিলেই