পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কর্মযোগের + sఫె" কর্মই আমাদিগকে সেই লক্ষ্যের দিকে লইয়া যায়। এইজন্ত নীতির এই একমাত্র সংজ্ঞা : বাহা স্বার্থশূন্ত, তাহাই নীতিসঙ্গত ; আর যাহা স্বার্থপর, তাহা নীতিবিরুদ্ধ। খুটিনাটির মধ্যে প্রবেশ করিলে ব্যাপারটি এত সহজ দেখাইবে না। অবস্থাভেদে খুটিনাটি কর্তব্য ভিন্ন ভিন্ন হইবে এ-কথা পূর্বেই বলিয়াছি। একই কার্ব এক ক্ষেত্রে স্বার্থশূন্ত এবং অপর ক্ষেত্রে সত্যই স্বার্থপ্রণোদিত হইতে পারে। স্বতরাং আমরা কেবল কর্তব্যের একটি সাধারণ সংজ্ঞা দিতে পারি ; বিশেষ বিশেষ কর্তব্য অবশ্য দেশ-কাল-পাত্র বিবেচনা করিয়া নিরূপিত হইবে। এক দেশে একপ্রকার আচরণ নীতিসঙ্গত বলিয়া বিবেচিত হয় । অপর দেশে আবার তাহাই অতিশয় নীতিবিগর্হিত বলিয়া গণ্য হইয়া থাকে। ইহার কারণ–পরিবেশ পৃথক। সমুদয় প্রকৃতির চরম লক্ষ্য মুক্তি, আর এই মুক্তি কেবল পূর্ণ নিঃস্বার্থপরতা হইতেই লাভ করা হয়। আর প্রত্যেক স্বার্থশূন্ত কার্য, প্রত্যেক নিঃস্বাৰ্থ চিন্তা, প্রত্যেক নিঃস্বাৰ্থ বাক্য আমাদিগকে ঐ আদর্শের অভিমুখে লইয়া যায় ; সেইজন্যই ঐ কার্ধকে নীতিসঙ্গত বল হয়। ক্রমশঃ বুঝিবে—এই সংজ্ঞাটি সকল ধর্ম এবং সকল নীতিশাস্ত্র-সম্বন্ধেই খাটে। নীতিতত্বের মূলসম্বন্ধে মৰশু বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধারণা থাকিতে পারে। কোন কোন প্রণালীতে নীতি কোন উন্নততর পুরুষ অর্থাৎ ভগবান হইতে প্রাপ্ত বলিয়া উল্লিখিত। যদি জিজ্ঞাস কর, “মাকুয কেন এ কাজ করিবে এবং ও কাজ করিবে না ? উত্তরে ঐ-সকল সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগণ বলিবেন—“ইহা ঈশ্বরের আদেশ’ ! কিন্তু যেখান হইতেই তাহারা ইহা পাইয়। থাকুন না কেন, তাহদের নীতিতত্ত্বের মূল কথা—নিজের চিন্তা না করা, ‘অহং'কে ত্যাগ করা। এই প্রকার উচ্চ নীতিতত্ত্ব সত্ত্বেও অনেকে তাহাদের ক্ষুদ্র ব্যক্তিত্ব ত্যাগ করিতে ভয় পান। যে ব্যক্তি এইরূপে ক্ষুদ্র ব্যক্তিত্বের ভাব আঁকড়াইয়া থাকিতে চায়, তাহাকে বলিতে পারি, এমন এক জনের চিস্ত কর, যে সম্পূর্ণ নিঃস্বাৰ—যাহার নিজের জন্য কোন চিন্তা নাই, ষে নিজের জন্য কিছু করে না, যে নিজের পক্ষে কোন কথা বলে না ; এখন বলে। দেখি, তাহার নিজত্ব কোথায় ? যতক্ষণ সে নিজের জন্য চিন্তা করে, কাজ করে বা কথা বলে, ততক্ষণই সে তাহার নিজেকে বোধ করে।/_ar যদি কেবল অপরের সম্বন্ধে—জগতের সকলের সম্বন্ধে সচেতন শুকে, তাছ। -