পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$6ः २ স্বামীজীর বাই ও রচনা জীবন-সমস্ত-সমাধানের রহস্ত। এই বিষয়টি আমরা গীতাতেও পাঠ করিয়া থাকি ; সেখানে আমরা এই শিক্ষা পাই যে/আমাদের কাজ করিতে হইবে, সমগ্র শক্তি দিয়া নিয়ত কাজ করিয়া যাইতে হুইবে ; এবং যে-কোন কাজেক্ট আমরা নিযুক্ত হই না কেন, তাহার উপর আমাদের সমগ্র মন সমাহিত করিতে হুইবে ; অথচ দেখিতে হইবে, আমরা যেন কর্মে আসক্ত হইয়া না পডি, অর্থাৎ অন্য কোন কিছুর প্রভাবে ষেন কর্ম হইতে সরিয়া ন যাই, কিন্তু তবু সর্বাবস্থাতেই যেন ইচ্ছামাত্র আমরা কর্মত্যাগ করিতে সমর্থ ર) আমরা যদি নিজ নিজ জীবন বিশ্লেষণ করি, তাহা হইলে দেখিতে পাই যে, আমাদের দুঃখের সবচেয়ে বড় কারণ এই ; আমরা কোন কার্ধ গ্রহণ করিয়া তাহাতে আমাদের সমস্ত শক্তি নিয়োজিত করি ; হয়তো তাহা নিষ্ফল হুইল, তথাপি আমরা তাহা পরিত্যাগ করিতে পারি না। আমরা জানি, কর্ম আমাদিগকে আঘাত দিতেছে, কর্মের প্রতি আরও বেশী আসক্তি আমাদের কেৰল দুঃখই দিতেছে—তথাপি আমরা ঐ কর্ম হইতে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করিতে পারি না। মক্ষিক মধুপান করিতে আসিয়াছিল, কিন্তু তাহার পাগুলি মধুভাণ্ডে আটকাইয়া গেল ! সে আর বাহির হইতে পারিল না। বার-বারই আমাদের এইরূপ দুরবস্থা হইতেছে। আমাদের সমগ্র জীবনই এইরূপ একটা রহস্তে আবৃত। কেন আমরা এ-জগতে আসিয়াছি ? আমরা এখানে মধুপান করিতে আসিয়াছিলাম, কিন্তু দেখিতে পাইতেছি—আমাদের হাত-পা উহাতে আবদ্ধ হইয়া পড়িয়াছে ! আমরা জগৎকে ধরিতে আসিয়াছিলাম, কিন্তু নিজেরাই ধুত হইয়া পড়িলাম ; ভোগ করিতে আসিয়াছিলাম, কিন্তু আমরাই ভুক্ত হইতেছি ; শাসন করিতে আসিয়াছিলাম, কিন্তু নিজেরাই শাসিত হইতেছি, কাজ করিতে আসিয়াছিলাম, কিন্তু অপরের হস্তে ক্রীড়নক হুইয়া পড়িতেছি ! এইরূপ ব্যাপার আমরা সর্বদাই দেখিতে পাই। আমাদের জীবনের প্রত্যেক ছোটখাট ব্যাপারে এইরূপই ঘটিয়া থাকে। অপরের মন-বুদ্ধি দ্বারা আমরা চালিত হুইতেছি ; আবার আমরা সর্বদাই অপরের মনবুদ্ধির উপর প্রভাব বিস্তার করিতে চেষ্টা করিতেছি । আমরা জীবনের মুখস্বাচ্ছন্দ্য উপভোগ করিতে চাই, কিন্তু সেগুলিই আমাদের প্রাণশক্তি ক্ষয় করিয়া ফেলে। আমরা চাই প্রকৃতি হইতে কিছু আহরণ করিতে ; কিন্তু পরিণামে দেখিতে পাই, প্রকৃতিই আমাদের সর্বস্ব কড়িয়া লয়—আমাদিগকে