পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জ্ঞান ও কর্ম [ ১৮৯৪ খুঃ ২৩শে নভেম্বর লওনে প্রদত্ত ভাষণের সারাংশ ] চিন্তার শক্তি হইতেই সর্বাপেক্ষা বেশী শক্তি পাওয়া যায় । বস্তু যত সূক্ষ্ম, ইহার শক্তিও ততই বেশী। চিত্তার নীরব শক্তি দূরের মানুষকেও প্রভাবিত করে, কারণ মন এক, আবার বহু। জগৎ যেন একটি মাকড়সার জাল, মনগুলি যেন মাকড়সা । এই জগৎ সর্বব্যাপী এক অখও সত্তারই প্রকাশ। ইন্দ্রিয়গুলির মধ্য দিয়া দৃষ্ট সেই সত্তা এই জগৎ । ইহাই মায়া। অতএব জগৎ একটি ভ্রম, অর্থাৎ সত্য বস্তুর অসম্পূর্ণ দর্শন, অর্ধেক প্রকাশ-প্রভাতে যেমন স্বৰ্ষকে একটা লাল বলের মতো দেখায়। এইভাবে য। কিছু অশুভ ও মন্দ, তা প্রকৃতপক্ষে দুর্বলতা মাত্র, ভালোরই অসম্পূর্ণ প্রকাশ। সরলরেখাকে অনন্ত পর্যন্ত বর্ধিত করিলে একটি বৃত্তেই পরিণত হয়। ভালোর সন্ধান আত্মামুসন্ধানেই ফিরিয়া আসে। ‘আমিই রহস্তের সমগ্র রূপ—ঈশ্বর। কাচা আমিই দেহ; আবার আমিই বিশ্বের পরমেশ্বর) মাহুষ পবিত্র ও নীতিপরায়ণ হইবে কেন —কারণ ইহাতে তাহার ইচ্ছাশক্তি দৃঢ় হইবে। যাহা কিছু মামুষের যথার্থ স্বরূপ প্রকাশ করিয়া মনন ও ইচ্ছাশক্তিকে সতেজ করে, তাহাই নৈতিক। যাহা কিছু ইহার বিপরীত, তাহাই দুর্নীতি। দেশভেদে ব্যক্তিভেদে ইহার মানও পৃথকৃ। মাস্থ্যকে বিধিনিষেধ শাস্ত্রবচন প্রভৃতির দাসত্ব হইতে মুক্তিলাভ করিতে হইবে। এখন আমাদের ইচ্ছার কোন স্বাধীনতা নাই, কিন্তু যখন মুক্ত হইব, তখন ইচ্ছ। স্বাধীন। সংসারকে এইভাবে ছাড়িয়া দেওয়ার নামই ত্যাগ । ইঞ্জিয়-স্বারেই ক্রোধ আসে, দুঃখ অনুভূত হয়। ত্যাগের ভাবে পূর্ণ হইয়া शंe । একদা আমার দেহ ছিল, জন্ম হইয়াছিল, আমি জীবন-সংগ্রামে লিপ্ত ছিলাম এবং মরিয়া গেলাম : কি ভয়াবহ প্ৰহেলিকা ! দেহের মধ্যে আবদ্ধ থাকিয় মুক্তির জন্য কাতর ক্ৰন্দন ! কিন্তু ত্যাগের অর্থ কি এই যে, আমাদের সকলকেই সন্ন্যাসী হইতে হইবে? তাহ হইলে কে অপরকে সাহায্য কৱিবে । ত্যাগের অর্ধ তপস্বী