পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ASశి স্বামীজীর বাণী ও রচনা র্যারা নিজেদের অন্তরের চিন্তারাজ্য জয় করেছেন, তারাই বড় বড় সাধু ও আচার্য, তাদের কথার শক্তিও তাই এত বেশী। উচ্চ দুর্গে আবদ্ধ কোন মন্ত্রীকে তার স্ত্রী গুবরে-পোকা, মধু, রেশমের স্বতো, দড়ি ও কাছি দিয়ে উদ্ধার করেছিলেন—এই রূপকের সাহায্যে স্বন্দরভাবে দেখানো হয়েছে— প্রাণের নিয়মন থেকে কি ক’রে ক্রমে ক্রমে মনোরাজ্য জয় করা যায়। প্রাণায়াম-রূপ রেশমস্থতার সাহায্যেই একটার পর একটা শক্তি আয়ত্ত করে আমরা একাগ্রতী-রূপ রজ্জ্ব ধ’রব, আর সেই রজ্জ্বর সাহায্যে দেহ-কারাগার থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে প্রকৃত মুক্তি লাভ করব । মুক্তি লাভ করে তার সাধনগুলি আমরা ছেড়ে দিতে পারি। প্রাণায়ামের অঙ্গ তিনটি ঃ ১ম : পূরক—শ্বাসগ্রহণ। ২য় ঃ কুম্ভক— স্বাসরোধ। ৩য় : রেচক—শ্বাসত্যাগ । ছুটি শক্তি-প্রবাহ মস্তিষ্কের ভিতর দিয়ে এসে মেরুদণ্ড বয়ে তার শেষভাগে পরম্পরকে অতিক্রম ক’রে আবার মস্তিক্ষে ফিরে যায়। প্রবাহ-দুটির একটির নাম সূর্য ( পিজলা ), এটি মস্তিষ্কের দক্ষিণাধ থেকে বেরিয়ে মেরুদণ্ডের রণদিকে মস্তিষ্কের ঠিক নিম্নে একবার পরস্পরকে অতিক্রম করে, আবার মেরুর নীচে চার ( ৪ )-এর অর্ধেকের মতো আকারে আর একবার পরম্পরকে অতিক্রম করে যায় । অন্য প্রবাহটির নাম চন্দ্র ( ঈড়া ), এর গতি পিঙ্গলার ঠিক উলটে এবং ৪-এর আকার সম্পূর্ণ করে। দেখতে চার (৪)-এর মতো হলেও এর নীচের দিকটা উপরের দিকের চেয়ে অনেকটা লম্বা। এই দুটো প্রবাহ দিনরাত্রি বইছে, আর বিভিন্ন কেন্দ্রে যাকে আমরা "চক্র’ ( plexuses ) বলি, এরা প্রাণশক্তি সঞ্চয় করে, কিন্তু তা আমরা প্রায় জানতে পারি না। একাগ্রতার দ্বারা এই শক্তিসমূহ এবং সমস্ত শরীরে তাদের ক্রিয়া আমরা অনুভব করতে পারি। এই ‘সূর্য ও চন্দ্রে'র প্রবাহ শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত, তাই শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রিত ক’রে আমরা সমস্ত দেহটাকে নিয়ন্ত্রিত করতে পারি। কঠ-উপনিষদে দেহকে রথ, মনকে লাগাম, ৰুদ্ধিকে সায়খি, ইন্দ্রিয়গুলিকে ঘোড়া এবং ইঞ্জিয়ভোগ্য বিষয়গুলিকে রাস্তার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। s, ১ এই খঙ্গেরাজযোগ গ্রন্থের ২য় অধ্যায় দ্রষ্টব্য