পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সরল রাজযোগ " באהב রৰী আত্মা ও সারধি বুদ্ধি সেই রখে বসে আছেন। সারৰি যদি বুদ্ধিরূপ ঘোড়াকে সংঘত করতে না পারে, তা হ’লে কখনও লক্ষ্যে পৌছতে পারবে না, দুই ঘোড়ার মতো ইন্দ্রিয়গুলি রথকে যেখানে খুশি টেনে নিয়ে গিয়ে রথীকে ধ্বংস করেও ফেলতে পারে। কিন্তু এই দুটি শক্তি-প্রবাহ (ঈড় ও পিজলা ) দুষ্ট অশ্বকে দমন করবার জন্য সারথির হাতে লাগামের মতো ; এ ছুটি ( লাগাম ) আয়ত্তে রেখে সারথি ওগুলিকে (অশ্ব ) নিয়ন্ত্রণ করবে। নীতিপরায়ণ হবার শক্তি আমাদের লাভ করতে হবে, তা না হ’লে আমাদের কর্মগুলিকে আমরা কিছুতেই নিয়ন্ত্রিত করতে পারব না। নীতিশিক্ষাগুলি কি ক'রে কর্মে পরিণত করতে পারা যায়, যোগ সেই শিক্ষা দেয়। নীতিপরায়ণ হওয়াই যোগের উদ্দেশু। জগতের বড় বড় আচার্ধমাত্রেই যোগী ছিলেন এবং প্রত্যেক শক্তিপ্রবাহকে তারা সম্পূর্ণরূপে বশে এনেছিলেন। এই প্রবাহ-দুটিকে যোগীরা মেরুর নিম্নভাগে (মূলাধারে ) সংযত ক’রে মেরুদণ্ডের ভেতর দিয়ে চালিত করেন, আর তখনই তা জ্ঞানপ্রবাহে পরিণত হয়, এ শুধু যোগীর মধ্যেই বর্তমান । প্রাণায়াম সম্বন্ধে দ্বিতীয় সাধন-প্রণালী—সকলের পক্ষে এক রকম নয় । প্রাণায়াম—একটা ছন্দের তালে তালে নিয়মিত ভাবে করতে হবে এবং তা করবার সহজ উপায় হচ্ছে গণনা করা, তবে সেটা একেবারে যন্ত্রের মতো হয়ে পড়ে, তাই গণনার নির্ধারিত সংখ্যায় আমরা পবিত্র ‘ওঁ কার মন্ত্ৰ জপ করি। এই প্রাণায়ামে অঙ্গুষ্ঠ দ্বারা দক্ষিণ নাসা বন্ধ করে চারবার ‘ওঁ জপ করতে করতে বাম নাসায় ধীরে ধীরে শ্বাস নিতে হয় । তারপর বাম নাকে তর্জনী রেখে দুটি নাসাই বন্ধ কর, মাখাটিকে বুকের উপর অবনমিত রেখে মনে মনে আটবার ‘ওঁ জপ করতে করতে শ্বাস রোধ ক’রে রাখে। তারপর মাথা ফের সোজা করে দক্ষিণ নাসা থেকে অঙ্গুষ্ঠ উঠিয়ে নিয়ে মনে মনে চারবার ‘ওঁ জপ করতে করতে ধীরে ধীরে শ্বাস ফেলো । যখন শ্বাস ফেলা শেষ হলে যাবে, তখন ফুসফুস থেকে সমস্ত বাতাস বের, *রে দেবার জন্য তলপেট সঙ্কুচিত করবে। তারপর বাম মহা বন্ধ করে।