পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• স্বামীজীর ৰাণী ও রচনা বিতর্কবাধলে প্রতিপক্ষভাবলম্ ॥ ৩৩ ৷ —যোগের প্রতিবন্ধক ভাবসমূহ উপস্থিত হইলে ঐগুলির বিপরীত চিন্তা করিতে হইবে। পূর্বে যে-সকল ধর্মের কথা বলা হইল সেগুলি অভ্যাস করিবার উপায়— মনে বিপরীত প্রকারের চিস্তাস্রোত প্রবাহিত করা ; অস্তরে চেীর্ষের ভাব আসিলে অচেীর্যের চিস্তা করিতে হইবে । দান গ্রহণ করিবার ইচ্ছা হইলে উহার বিপরীত চিন্তা করিতে হইবে। বিতর্ক হিংসাদয়ঃ কৃতকারিতামুমোদিত লোভক্রোধমোহপূর্বক মৃদুমধ্যাধিমাত্রা দুঃখজ্ঞানানন্তফল৷ ইতি প্রতিপক্ষভাবনৰ্ম্ম ॥৩৪ ॥ —পূর্বসূত্রে যে প্রতিপক্ষ-ভাবনার কথা বলা হইয়াছে, তাহার প্রণালী এইরূপ : বিতর্ক অর্থাৎ যোগের প্রতিবন্ধক হিংসাদি কৃত, কারিত অথবা মন্থমোদিত ; উহাদের কারণ লোভ, ক্রোধ বা মোহ অর্থাৎ অজ্ঞান, তাহা অল্পই হউক আর মধ্যম পরিমাণই হউক, অথবা অধিক পরিমাণই হউক ; উহাদের ফল অনন্ত অজ্ঞান ও ক্লেশ ; এইরূপ ভাবনাকেই প্রতিপক্ষ-ভাবনা বলে । আমি নিজে মিথ্যা কথা বলিলে যে পাপ হয়, যদি আমি অপরকে মিথ্যা কথা বলিতে প্রবৃত্ত করি, অথবা আপরে মিথ্যা বলিলে তাহ অনুমোদন করি, তাহাতেও তুল্য পরিমাণ পাপ হয়। মিথ্যা সামান্ত হইলেও উহ মিথ্যা। পর্বতগুহায় বসিয়াও যদি তুমি পাপ চিন্তা করিয়া থাকে, যদি কাহারও প্রতি অন্তরে স্বণ প্রকাশ করিয়া থাকে, তাহা হইলে তাহাও সঞ্চিত থাকিবে, কালে আবার তাহা তোমার উপর প্রতিঘাত করিবে, একদিন না একদিন কোন না কোন প্রকার দুঃখের আকারে উহা প্রবলবেগে তোমাকে আক্রমণ করিবে। তুমি যদি ঈর্ষ ও ঘৃণার ভাব পোষণ কর এবং চতুদিকে প্রেরণ কর, তবে বধিতভাবে উহা তোমার নিকট ফিরিয়া আসিবে। জগতের কোন শক্তিই উহা নিবারণ করিতে পারিবে না। তুমি যখন একবার ঐ শক্তি প্রেরণ করিয়াছ, তখন অৰশু তোমাকে উহার প্রতিঘাত সহ করিতে হইবে। এইটি স্মরণ করিলে তুমি অলংকার্য হইতে নিবৃত্ত হইবে।