পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

888 স্বামীজীর বাণী ও রচনা প্রভৃতি—প্রত্যেক স্ত্রী পুরুষ ও বালকের পক্ষে জাতি-দেশ-অবস্থা-নির্বিশেষে अन्नुपर्छम्न । ভারতবর্ষে যোগের নানা প্রকার গ্রন্থ থাকিলেও স্বামীজী পাতঞ্জল স্থত্রের রাজযোগকেই সর্বোচ্চ প্রামাণিক গ্রন্থ বলিয়া গ্রহণ করিয়াছেন, বর্তমান গ্রন্থে তাহারই ব্যাখ্যা করিয়াছেন । ভূমিকায় তিনি লিখিয়াছেন : ভারতবর্ষে যত বেদমতানুযায়ী দর্শনশাস্ত্র আছে, তাহদের সকলের একই লক্ষ্য—পূর্ণতা লাভ করিয়া আত্মার মুক্তি ; ইহার উপায়—যোগ। যোগ’ শব্দ বহুভাবব্যাপী। সাংখ্য ও বেদান্ত উভয় মতই কোন না কোন আকারে যোগের সমর্থন করে। অন্যান্য দার্শনিকগণের কোন কোন দার্শনিক তত্ত্ব বিষয়ে পতঞ্জলির সহিত মতভেদ থাকিলেও সকলেই অবিপর্যয়ে তদীয় সাধনপ্রণালীর অনুমোদন করিয়াছেন। হঠযোগাদি যোগের অন্তভূক্ত হইলেও উহার সাধকগণ শুধু শরীরকে দীর্ঘজীবী করিবার জন্য বিভিন্ন আসন ও প্রাণায়ামের চর্চা করেন বলিয়া বর্তমান গ্রন্থে স্বামীজী উহার চর্চা হইতে বিরত হইয়াছেন এবং সকলকেই উহ। সাধন করিয়া বৃথা সময়ক্ষেপ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। স্বামীজী এই ভূমিকায় যোগশিক্ষার্থিগণকে বিশেষভাবে সাবধান করিয়া দিয়া বলিতেছেন যে, যোগের কোন কোন সামান্ত অঙ্গ ব্যতীত নিরাপদে যোগ শিক্ষা করিতে হইলে গুরু সর্বদা নিকটে থাকা আবশুক । পাতঞ্জল যোগসূত্র-ব্যাখ্যাতে স্বামীজী একটি স্বতন্ত্র পথ অবলম্বন করিয়াছেন ; যাহাতে বর্তমান বিজ্ঞান-সম্মত ও সকলের পক্ষে গ্রহণযোগ্য হয়, সেইভাবে উহা প্রকাশ করিতে তিনি চেষ্টার কোন ত্রুটি করেন নাই। এই যোগস্থত্রের নানাবিধ ভান্ত টীকা ও বৃত্তি আদি আছে, তন্মধ্যে ব্যাসভাষ্য ও ভোজবৃত্তি সমধিক প্রচলিত। ভোজবৃত্তি বা রাজমার্তগুtখ্যবৃত্তি অধিকতর সহজ ও প্রাঞ্চল বলিয়া স্বামীজী তাহার ব্যাখ্যায় অনেক স্থলে উহার অনুসরণ করিয়াছেন ; কোন কোন স্থলে অপরাপর ভাষ্য ও যোগের অন্যান্য পুস্তক হইতেও প্রয়োজনীয় তত্ত্ব গ্রহণ করিয়াছেন। যোগের অষ্টাঙ্গ বা যোগসাধনের আটটি উপায় পতঞ্জলি উল্লেখ করিয়াছেন —ঐগুলি যম, নিয়ম, আসন, প্রাণায়াম, প্রত্যাহার, ধ্যান, ধারণা ও সমাধি ।