পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তথ্যপঞ্জী ‘ঘম বলিতে অহিংসা (কায়মনোবাক্যে ), সত্য, অন্তেয় (অচৌর্ষ ) ব্রহ্মচর্য ও অপরিগ্রহ ( অপরের নিকট হইতে যথাসম্ভব অপ্রয়োজনীয় কোন বস্তু গ্রহণ না করা ) বুঝায়। ‘নিয়ম বলিতে শৌচ ( অস্তবহিঃ পবিত্রতা ) সন্তোষ, তপঃ (শারীরিক, মানসিক ও বাচিক তপস্তা), স্বাধ্যায় ( যে পুস্তক-পাঠে নিজের কল্যাণ হয়, উহা নিয়মিত পাঠ করা) ও ঈশ্বর-প্রণিধান ( ঈশ্বর বা ভগবচ্চিস্তা) বুঝায় । ‘আসন’ বলিতে নানাবিধ শারীরিক আসন, ষে-আসনে বসিয়া অধিকক্ষণ এক ভাবে চিন্তা করা যায়, তাহাই বুঝাইয়া থাকে ; ‘স্থিরমুখমাসনম ( সাধনপাদ, ৪৬ ) ‘প্রাণায়াম’ বলিতে আমরা শুধু প্রাণের সংযম বা নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ বুঝি, কিন্তু স্বামীজী প্রাণ’ ও ‘প্রাণের আধ্যাত্মিক রূপ’ বিষয়ক বক্তৃতায় উহাকে আরও বিস্তারিত ও বর্তমান বিজ্ঞান-সন্মতভাবে ব্যাখ্যা করিয়াছেন। প্রাণ বলিতে শুধু নি:শ্বাস-প্রশ্বাস বুঝায় না, উহা জগতের মূল শক্তি, যাহা দ্বারা প্রতি অণু পরমাণু পর্যন্ত চালিত হইতেছে, উহাকেই এক আকারে আমরা আমাদের ফুসফুসের ভিতর নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসপরিচালকরূপে দেখিতে পাই। উহাই আবার অন্তরূপে আমাদের মেরুদণ্ডের নিম্নে—যোগীদের মতে মূলাধার চক্ৰে—কুণ্ডলিনী-শক্তিরূপে অবস্থিত,— ‘প্রন্থপ্তভুজগাকার অাধার-পদ্মবাসিনী’। এই কুণ্ডলিনীর জাগরণই যোগীদের কাম্য। নিঃশ্বাসপ্রশ্বাস-নিয়ন্ত্রণ ও যোগের অন্তান্ত অঙ্গ অনুষ্ঠান করিলে উহার জাগরণ হইয়া থাকে । আমাদের মেরুদণ্ড মধ্যে—যোগীদের মতে যট্‌চক্র অবস্থিত। কুগুলিনী জাগ্রত হইলে ধীরে ধীরে উর্ধ্বমুখী হইয়া চক্র হইতে চক্রাস্তরে গমন করেন এবং পরে মস্তকমধ্যস্থ সহস্রার চক্রে বা পদ্মে যাইয়া উপস্থিত হন। তখন আমাদের সকল হৃদয়গ্রন্থি ছিন্ন হইয়া যায়, আমরা সকল সংশয় অতিক্রম করিয়া পরমানন্দে অবস্থিত হই । ‘ভিদ্যতে হৃদয়গ্রন্থি ইত্যাদি মুগুক উপ, ২২২ । 'প্রত্যাহার' অর্থে—বাহিরের বিষয় হইতে মনকে ভিতরে টানিয়া আন । 'ধারণা' অর্থে—মনকে ভিতরে বা বাহিরে একস্থানে কিছুক্ষণ ধারণ বা স্থির করিয়া রাখা, 'দেশবন্ধচিত্তস্ত ধারণা’—(বিভূতিপাদ, ১ ) ।