পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তথ্যপঞ্জী 88ዓ রূপ, রস, গন্ধ, শব্দ, স্পর্শ এবং উহাদিগকে দেশ-কালের ভিতরে চিস্তা করা হইতেছে । নির্বিচার : যখন ঐ ধ্যেয়বস্তুই আবার দেশকালশূন্তরূপে চিন্তা করা যায়। ইহা ছাড়া সম্প্রজ্ঞাত সমাধির আরও দুই প্রকারের কথা স্বত্রে উল্লিখিত আছে, যথা ‘আনন্দ’ ও ‘অস্মিতা’ , উহাতে সূক্ষ্ম স্থল উভয় প্রকার ভূতের চিস্ত পরিত্যাগ করিয়া শুধু অস্তঃকরণকেই ধ্যানের বিষয় করিতে হয়। যখন উহাকে ‘রজস্তমোলেশান্থবিদ্ধ রূপে চিন্তা করিয়া সমাধি হয়, তখন তাহাকে ‘আনন্দ সমাধি’ বলে, আবার যখন ঐ সমাধিই পরিপক্ক হইয়া অন্যান্য সকল ধোয় বস্তু পরিত্যাগ করিয়া মনের স্বরূপ অবস্থা চিন্তা করিতে করিতে কেবলমাত্র সাত্ত্বিক অহঙ্কারে স্থিত হয়, তখন উহাকেই ‘অস্মিত সমাধি’ বলে। অসম্প্রজ্ঞাত সমাধি অন্তপ্রকার—স্বামীজী বলিতেছেন, এই সমাধিই কেবল আমাদিগকে মুক্তি দিতে পারে। সম্প্রজ্ঞাত সমধিতে শক্তিলাভ হয়, কিন্তু মুক্তি হয় না। এই অসম্প্রজ্ঞাত সমাধিতে সমুদয় মানসিক ক্রিয়ার বিরাম অভ্যাস করিতে হয়, কিন্তু তখনও সংস্কার মাত্র অবশিষ্ট থাকে । ‘বিরাম প্রত্যয়াভ্যাসপূর্ব সংস্কারশেষোহন্তঃ’ (সমাধিপাদ, ১৮) । এই সমাধিই ক্রমে ক্রমে নিবীজ হইয়া যায় ও আমাদের জ্ঞানাতীত অবস্থা লাভ হয়। ‘তস্তাপি নিরোধে সর্বনিরোধাৎ নিবীজঃ সমাধি: ( সমাধিপাদ, ৫১ ) । এই অষ্টাঙ্গ সাধনের উদ্দেশু ‘শ্রষ্টা’র স্বীয় স্বরূপে অবস্থিত হওয়া। দ্রষ্টা (পুরুষ ) অন্ত সময়ে তাহার চিত্তবৃত্তির সহিত নিজেকে মিলাইয় ফেলেন। তদা ভ্ৰষ্টুং স্বরূপেহবস্থানম’, ‘বৃত্তি সান্ধপামিতরত্র'—(সমাধিপাদ, ৩, ৪ ) । যোগদর্শন সাংখ্যদর্শনের উপর স্থাপিত ; উভয়ের প্রতিপাদ্য একই। উভয়েই স্বীকার করেন, প্রকৃতি ও পুরুষ বলিয়া দুইটি মূল পদার্থ আছে, প্রকৃতি জড় (সত্ত্ব, রজঃ ও তমোময়ী ) ; পুরুষ নিক্রিয় চৈতন্যস্বরূপ । এই চেতন পুরুষের সান্নিধ্যে প্রকৃতিতে আলোড়ন উপস্থিত হয় ও প্রকৃতি হইতে চতুবিংশতি তত্ব (প্রকৃতিকে লইয়া ২৪) উদ্ভূত হয়। উহারই নাম স্বষ্টি, আবার যখন এই চতুবিংশতি তত্ত্ব একে একে উহাতে প্রবেশ করে, তখন উহার স্বষ্টি