পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নিজ মিজ কর্মক্ষেত্রে প্রত্যেকেই বড় @? রাও দেখিত না। কিন্তু ইহাদের মধ্যে কেহ যদি রাজকন্যার মনোমত তেন, তবে রাজকন্যা তাহার গলদেশে বরমাল্য অর্পণ করিতেন এবং তিনিই জকন্যার স্বামী হইতেন । যে-দেশে আমাদের পূর্ব-কথিত রাজা ও সন্ন্যাসী আসিয়াছেন, সেই দেশের কন্যার এরূপ স্বয়ম্বর-সভা হইতেছিল। এই রাজকন্যা পৃথিবীর মধ্যে পক্ষ স্বন্দরী ছিলেন ; ঘোষিত হইয়াছিল যে, রাজার মৃত্যুর পর জকন্যাই রাজ্য লাভ করিবেন। এই রাজকন্যার ইচ্ছা ছিল, সর্বাপেক্ষা পুরুষকে বিবাহ করেন, কিন্তু তাহার মনের মতো স্বপুরুষ পাওয়া যাইতেছিল }। অনেকবার এইরূপ স্বয়ম্বর-সভা আহূত হয়, তথাপি রাজকন্যা কাহাকেও নানীত করিতে পারেন নাই। এই স্বয়ম্বর-সভাই সর্বাপেক্ষ বৃহৎ হইয়াছিল। সভায় পূর্ব পূর্ব বার অপেক্ষ অধিকতর লোক সমবেত হইয়াছিল, এবং সভার দৃপ্ত অতি চমৎকার ও অদ্ভূত হইয়াছিল। সিংহাসনে সমাসীন রাজকন্যা সভায় প্রবেশ করিলেন এবং বাহকগণ হাকে সভামধ্যে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে লইয়। যাইতে লাগিলেন। রাজকন্য। রিও দিকে ক্ৰক্ষেপ করিলেন না। এবারেও স্বয়ম্বর-সভা পূর্ব পূর্ব বারের ব্যর্থ হইবে ভাবিয়া সকলেই নিরুৎসাহ হইতে লাগিল। এমন সময় ক যুবা সন্ন্যাসী সেখানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন ; তাহার রূপের প্রভা খিযা বোধ হইল যেন স্বয়ং সুর্যদেব আকাশমার্গ ছাড়িয়া ধরাতলে বতীর্ণ হইয়াছেন এবং সভার এককোণে দাডাইয়া দেখিতেছেন–কি ইতেছে। রাজকন্যাসহ সেই সিংহাসন তাহার নিকটবর্তী হইল। রাজকন্য ই পরমরূপবান সন্ন্যাসীকে দেখিবামাত্র বাহকদিগকে থামিতে বলিয়া সন্ন্যাসীর লদেশে বরমাল্য অর্পণ করিলেন। যুব সন্ন্যাসী মালা ছুড়িয়া ফেলিয়া দিলেন ও লিতে লাগিলেন,"এ কি নিৰুদ্ধিতা ! আমি সন্ন্যাসী , আমার পক্ষে বিবাহের র্থ কি ? সেই দেশের রাজা মনে করিলেন, লোকটি বোধ হয় দরিদ্র, সেইজন্য জকন্যাকে বিবাহ করিতে সাহস করিতেছে না ; অতএব তিনি বলিলেন, আমার কস্তার সহিত তুমি এখনই অর্ধেক রাজত্ব পাইবে এবং আমার মৃত্যুর র সমগ্র রাজ্য।’ এই বলিয়া সন্ন্যাসীর গলায় আবার মালা পরাইয়া দিলেন। * বাজে কথা। আমি বিবাহ করিতে চাই না, তৰু এ কি ? বলিয়া সন্ন্যাসী নরায় মালা ফেলিয়া দিয়া দ্রুতপদে সেই সভা হইতে প্রস্থান করিলেন।