পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিব্রাজক గ్రాఫి জাত নিপাত করতে লাগলেন। বেচারীরা প্রায় সব মারা গেল, কিছু অংশ ঝাড়-জঙ্গলে আজও বাস করছে । এই রকম ক’রে লঙ্কার নাম হ’ল সিংহল, আর হ’ল বাঙালী বদমাশের উপনিবেশ ! ক্রমে অশোক মহারাজার আমলে, র্তার ছেলে মাহিন্দো আর মেয়ে সংঘমিত্তা সন্ন্যাস নিয়ে ধর্ম প্রচার করতে সিংহল ট্যপুতে উপস্থিত হলেন । এরা গিয়ে দেখলেন যে, লোকগুলো বড়ই আদাড়ে হয়ে গিয়েছে। আজীবন পরিশ্রম ক’রে, সেগুলোকে যথাসম্ভব সভ্য করলেন; উত্তম উত্তম নিয়ম করলেন ; আর শাক্যমুনির সম্প্রদায়ে আনলেন। দেখতে দেখতে সিলোনিরা বেজায় গোড়া বৌদ্ধ হয়ে উঠল । লঙ্কাদ্বীপের মধ্যভাগে এক প্রকাণ্ড শহর বানালে, তার নাম দিলে অনুরাধাপুরম, এখনও সে শহরের ভগ্নাবশেষ দেখলে আক্কেল হয়রান হয়ে যায়। প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড স্তুপ, ক্রোশ ক্রোশ পাথরের ভাঙা বাড়ী দাড়িয়ে আছে। আরও কত জঙ্গল হয়ে রয়েছে, এখনও সাফ হয় নাই । সিলোনময় নেড়া মাথা, করোয়াধারী, হলদে চাদর-মোড়া ভিক্ষু-ভিক্ষুণী ছড়িয়ে পড়ল। জায়গায় জায়গায় বড় বড় মন্দির উঠল—মস্ত মস্ত ধ্যানমূতি, জ্ঞানমুদ্রা ক’রে প্রচারমূতি, কাত হয়ে শুয়ে মহানির্বাণ-মূর্তি—তার মধ্যে। আর দ্যালের গায়ে সিলোনির দুঃমি করলে নরকে তাদের কি হাল হয়, তাই আঁকা ; কোনটাকে ভূতে ঠেঙাচ্চে, কোনটাকে করাতে চিরছে, কোনটাকে পোড়াচ্চে, কোনটাকে তপ্ত তেলে ভাজছে, কোনটার ছাল ছাড়িয়ে নিচ্চে—সে মহা বীভৎস কারখানা ! এ ‘অহিংসা পরমে ধর্মের ভেতরে যে এমন কারখানা কে জানে বাপু ! চীনেও ঐ হাল ; জাপানেও ঐ । এদিকে তো অহিংসা, আর সাজার পরিপাটি দেখলে আত্মাপুরুষ শুকিয়ে যায়। এক ‘অহিংসা পরমে ধর্মের বাড়ীতে ঢুকেছে—চোর। কর্তার ছেলেরা তাকে পাকুড়া ক’রে বেদম পিটছে। তখন কর্তা দোতলার বারাণ্ডায় এসে, গোলমাল দেখে, খবর নিয়ে চেচাতে লাগলেন, ‘ওরে মারিসনি, মারিসনি ; অহিংসা পরমে ধর্ম ।’ বাচ্চা-অহিংসারা মার থামিয়ে জিজ্ঞাসা করলে, ‘তবে চোরকে কি করা যায় ? কৰ্তা আদেশ করলেন, ‘ওকে থলিতে পুরে জলে ফেলে দাও । চোর জোড় হাত ক’রে আপ্যায়িত হয়ে বললে, ‘আহ, কর্তার কি দয়া !’ - বৌদ্ধর বড় শাস্তু, সকল ধর্মের উপর সমষ্টি—এই তো শুনেছিলুম। বৌদ্ধ প্রচারকের আমাদের কলকেতায় এসে রঙ-বেরঙের গাল ঝাড়ে,