পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিব্রাজক So S যে মাছগুলি হাঙ্গরের আগে আগে যাচ্চে, তাদের নাম ‘আড়কাটা মাছ— পাইলট ফিস। তার হাঙ্গরকে শিকার দেখিয়ে দেয় আর বোধ হয় প্রসাদটী-আসটা পায়। কিন্তু হাঙ্গরের সে মুখ-ব্যাদান দেখলে তারা যে বেশী সফল হয়, তা বোধ হয় না। যে মাছগুলি আশেপাশে ঘুরছে, পিঠে চড়ে বসছে, তার হাঙ্গর-চোষক’। তাদের বুকের কাছে প্রায় চার ইঞ্চি লম্বা ও দুই ইঞ্চি চওড়া চেপটা গোলপান একটি স্থান আছে। তার মাঝে, যেমন ইংরেজি অনেক রবারের জুতোর তলায় লম্বা লম্বা জুলি-কাটা কিরকিরে থাকে, তেমনি জুলিকাটাকাটা । সেই জায়গাটা ঐ মাছ, হাঙ্গরের গায়ে দিয়ে চিপসে ধরে ; তাই হাঙ্গরের গায়ে পিঠে চড়ে চলছে দেখায়। এরা নাকি হাঙ্গরের গায়ের পোক-মাকড় খেয়ে বঁাচে । এই দুইপ্রকার মাছ পরিবেষ্টিত না হয়ে হাঙ্গর চলেন না। আর এদের, নিজের সহায়-পারিষদ জ্ঞানে কিছু বলেনও না । এই মাছ একটা ছোট হাতক্ষতেীয় ধরা পড়ল। তার বুকে জুতোর তলা একটু চেপে দিয়ে পা তুলতেই সেটা পায়ের সঙ্গে চিপসে উঠতে লাগলো ; ঐ রকম করে সে হাঙ্গরের গাঁয়ে লেগে যায়। সেকেণ্ড কেলাসের লোকগুলির বড়ই উৎসাহ । তাদের মধ্যে একজন ফেীজি লোক—তার তো উৎসাহের সীমা নেই। কোথা থেকে জাহাজ খুজে একটা ভীষণ বড়শির যোগাড় করলে, সে কুয়োর ঘটি তোলার ঠাকুরদাদা। তাতে সেরখানেক মাংস আচ্ছা দড়ি দিয়ে জোর ক’রে জড়িয়ে বাধলে । তাতে এক মোট কাছি বাধা হ’ল। হাত চার বাদ দিয়ে, একখানা মস্ত কাঠ ফাতনার জন্য লাগানো হ’ল । তারপর ফাতনা সুদ্ধ বড়শি, ঝুপ ক’রে জলে ফেলে দেওয়া হ’ল । জাহাজের নীচে একখান পুলিশের নৌকা—আমরা আসা পর্যন্ত চৌকি দিচ্ছিল, পাছে ডাঙার সঙ্গে আমাদের কোন রকম ছোয়াছুয়ি হয়। সেই নৌকার উপর আবার দুজন দিব্বি ঘুমুচ্ছিল, আর যাত্রীদের যথেষ্ট ঘৃণার কারণ হচ্ছিল। এক্ষণে তারা বড় বন্ধু হয়ে উঠল। হাকাইকির চোটে আরব মিঞা চোখ মুছতে মুছতে উঠে দাড়ালেন। কি একটা হাঙ্গামা উপস্থিত বলে কোমর আটবার যোগাড় করছেন, এমন সময়ে বুঝতে পারলেন যে অত ইকোস্থাকি, কেবল তাকে-কড়িকাষ্ঠরূপ হাঙ্গর ধরবার ফাতনাটিকে টোপ সহিত কিঞ্চিৎ দূরে সরিয়ে দেবার অনুরোধ-ধ্বনি। তখন তিনি নিঃশ্বাস ছেড়ে, আকর্ণ-বিস্তার হাসি হেসে একটা বল্লির ডগায় ক’রে &