পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিব্রাজক ఈ ఘో বিদ্যা-বুদ্ধি সমস্ত লোপ পেয়ে গেল, কিন্তু যেমন হিন্দুদের ঘরে পূর্বপুরুষদের বিদ্যা-বুদ্ধি কিছু কিছু রক্ষিত আছে, তেমনি ক্রিশচীন গ্রীকদের কাছে ছিল ; সেই সকল পুস্তক চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল। তাতেই ইংরেজ, জার্মান, ফ্রেঞ্চ প্রভৃতি জাতির মধ্যে প্রথম সভ্যতার উন্মেষ। গ্রীকভাষা, গ্রীকবিদ্যা শেখবার একটা ধুম পড়ে গেল। প্রথমে যা কিছু ঐ সকল পুস্তকে ছিল, তা হাড়মৃদ্ধ গেল হ’ল। তারপর যখন নিজেদের বুদ্ধি মার্জিত হয়ে আসতে লাগলো এবং ক্রমে ক্রমে পদার্থ-বিদ্যার অভু্যখান হ’তে লাগলো, তখন ঐ সকল গ্রন্থের সময়, প্রণেতা, বিষয়, যাথাতথ্য ইত্যাদির গবেষণা চলতে লাগলো। ক্রিশ্চানদের ধর্ম-গ্রন্থগুলি ছাড়া প্রাচীন অ-ক্রিশচীন গ্রীকদের সমস্ত গ্রন্থের উপর মতামত, প্রকাশ করতে তো আর কোন বাধা ছিল না, কাজেই বাহ এবং আভ্যস্তর সমালোচনার এক বিদ্যা বেরিয়ে পড়ল । মনে কর, একখানা পুস্তকে লিখেছে যে অমুক সময়ে অমুক ঘটনা ঘটেছিল। কেউ দয়া ক’রে একটা পুস্তকে যা হয় লিখেছেন বললেই কি সেটা সত্য হ’ল ? লোকে, বিশেষ সে কালের, অনেক কথাই কল্পনা থেকে লিখত। আবার প্রকৃতি, এমন কি, আমাদের পৃথিবী সম্বন্ধে তাদের জ্ঞান অল্প ছিল ; এই সকল কারণে গ্রন্থোক্ত বিষয়ের সত্যাসত্যের নির্ধারণে বিষম সন্দেহ জন্মাতে লাগলো । প্রথম উপায়—মনে কর, একজন গ্রীক ঐতিহাসিক লিখেছেন যে, অমুক সময়ে ভারতবর্ষে চন্দ্রগুপ্ত ব’লে একজন রাজা ছিলেন । যদি ভারতবর্ষের গ্রন্থেও ঐ সময়ে ঐ রাজার উল্লেখ দেখা যায়, তা হ’লে বিষয়টা অনেক প্রমাণ হ’ল বইকি। যদি চন্দ্রগুপ্তের কতকগুলো টাকা পাওয়া যায় বা তার সময়ের একটা বাড়ী পাওয়া যায়, যাতে র্তার উল্লেখ আছে, তা হ’লে আর কোন গোলই রইল না । দ্বিতীয় উপায়—মনে কর, আবার একটা পুস্তকে লেখা আছে যে একটা ঘটনা সিকন্দর বাদশার সময়ের, কিন্তু তার মধ্যে দু-এক জন রোমক বাদশার উল্লেখ রয়েছে, এমন ভাবে রয়েছে যে প্রক্ষিপ্ত হওয়া সম্ভব নয়— তা হ’লে সে পুস্তকটি সিকন্দর বাদশার সময়ের নয় ব’লে প্রমাণ হ’ল। তৃতীয় উপায় ভাষা—সময়ে সময়ে সকল ভাষারই পরিবর্তন হচ্চে, আবার এক এক লেখকের একু একটা ঢঙ থাকে। যদি একটা পুস্তকে খামক একটা অপ্রাসঙ্গিক বর্ণনা লেখকের বিপরীত ঢঙে থাকে, তা হলেই সেটা প্রক্ষিপ্ত