পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য >切-> হচ্ছে খাওয়া । আমেরিকায় রুটি খাওয়া নাই বললেই হয়। মাছ মাছই এল, মাংস মাংসই এল, তাকে আমনি খেতে হবে, ভাত রুটির সংযোগে নয়। এবং এজন্য প্রত্যেক বারেই থাল। বদলানো হয়। যদি দশটা খাবার জিনিস থাকে তো দশবার থালা বদলাতে হয় । যেমন মনে কর, আমাদের দেশে প্রথমে শুধু শুক্তে এল, তারপর থালা বদলে শুধু ডাল এল, আবার থালা বদলে শুধু ঝোল ল, আবার থালা বদলে দুটি ভাত, নয় তো দুখান লুচি ইত্যাদি। এর লাভের মধ্যে এই যে, নানা জিনিস অল্প অল্প খাওয়া হয়, পেট বোঝাই করা হয় না। ফরাসী চাল—সকালবেল ‘কফি এবং এক-আধ টুকরো রুটি-মাখম ; দুপুরবেলা মাছ মাংস ইত্যাদি মধ্যবিৎ ; রাত্রে লম্বা খাওয়া। ইতালি, স্পেন প্রভৃতি জাতিদের ঐ এক রকম ; জার্মানরা ক্রমাগতই খাচ্ছে—পাচ বার, ছ বার, প্রত্যেক বারেই অল্পবিস্তর মাংস ৷ ইংরেজরা তিনবার—সকালে অল্প, কিন্তু মধ্যে মধ্যে কফি-যোগ, চা-যোগ আছে । আমেরিকানদের তিনবার—উত্তম ভোজন, মাংস প্রচুর। তবে এ সকল দেশেই ডিনার’টা প্রধান খাদ্য-ধনী হ’লে তার ফরাসী রাধুনী এবং ফরাসী চাল। প্রথমে একটু আধটু নোনা মাছ বা মাছের ডিম, বা কোন চাটনি বা সবজি। এটা হচ্ছে ক্ষুধাবৃদ্ধি। তারপর সুপ, তারপর আজকাল ফ্যাশন—একটা ফল, তারপর মাছ, তারপর মাংসের একটা তরকারি, তারপর থান-মাংস শুল্য, সঙ্গে কাচা সবজি ; তারপর আরণ্য মাংস মৃগপক্ষ্যাদি, তারপর মিষ্টান্ন, শেষ কুলপি—মধুরেণ সমাপয়েৎ’। ধনী হ’লে প্রায় প্রত্যেক বার থাল বদলাবার সঙ্গে সঙ্গে মদ বদলাচ্ছে—শেরি, ক্ল্যারেট, খামপা ইত্যাদি এবং মধ্যে মধ্যে মদের কুলপি একটু আধটু ৷ থাল বদলাবার সঙ্গে সঙ্গে কাটা-চামচ সব বদলাচ্ছে ; আহারাস্তে 'কফি-বিনা-দুগ্ধ, আসবমদ্য—খুদে খুদে গ্লাসে, এবং ধূমপান। খাওয়ার রকমারির সঙ্গে মদের রকমারি দেখাতে পারলে তবে "বড়োমামুষি চাল’ বলবে। একটা খাওয়ায় মামাদের দেশের একটা মধ্যবিৎ লোক সর্বস্বাস্ত হতে পারে, এমন খাওয়ার ধুম এরা করে । আর্বর একট পীঠে বসত, একটা পীঠে ঠেসান দিত এবং জলচৌকির . উপর থালা রেথে এক থালাতেই সকল খাওয়া খেত। ঐ চাল এখনও