পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ξ ο 3 স্বামীজীর বাণী ও রচনা আদিম অবস্থায় বিবাহ থাকে না, ক্রমে ক্রমে যৌনসম্বন্ধ উপস্থিত হ’ল । প্রথম বৈবাহিক সম্বন্ধ সর্বসমাজে মায়ের উপর ছিল। বাপের বড় ঠিকানা থাকত না । মায়ের নামে ছেলেপুলের নাম হ’ত । মেয়েদের হাতে সমস্ত ধন থাকত ছেলে মানুষ করবার জন্য। ক্রমে ধন-পত্র পুরুষের হাতে গেল, মেয়েরাও পুরুষের হাতে গেল। পুরুষ বললে, যেমন এ ধনধান্ত আমার, আমি চাষবাস ক’রে বা লুঠতরাজ করে উপার্জন করেছি, এতে যদি কেউ ভাগ বসায় তো আমি বিরোধ ক’রব’, তেমনি বললে, “এ মেয়েগুলো আমার, এতে যদি কেউ হস্তাপণ করে তো বিরোধ হবে।’ বর্তমান বিবাহের সূত্রপাত হ’ল । মেয়েমানুষ—পুরুষের ঘটি বাটি গোলাম প্রভৃতি অধিকারের ন্যায় হ’ল । প্রাচীন রীতি—একদলের পুরুষ অন্যদলে বে করত। সে বিবাহও জবরদস্তি— মেয়ে ছিনিয়ে এনে । ক্রমে সে কাড়াকড়ি বদলে গেল, স্বেচ্ছায় বিবাহ চ’লল ; কিন্তু সকল বিষয়ের কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ আভাস থাকে। এখনও প্রায় সর্বদেশে বরকে একটা নকল আক্রমণ করে। বাঙলাদেশে, ইউরোপে চাল দিয়ে বরকে আঘাত করে, ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে কনের আত্মীয় মেয়ের বরযাত্রীদের গালিগালাজ করে, ইত্যাদি । দেবতা ও অসুর সমাজ স্বষ্টি হতে লাগলো। দেশভেদে সমাজের স্বষ্টি। সমুদ্রের ধারে যারা বাস করত, তার অধিকাংশই মাছ ধ’রে জীবিকা নির্বাহ ক’রত ; যার সমতল জমিতে, তাদের—চাষবাস ; যারা পার্বত্য দেশে, তারা ভেড়া চরাত ; যারা মরুময় দেশে, তারা ছাগল উট চরাতে লাগলো ; কতকদল জঙ্গলের মধ্যে বাস ক’রে, শিকার করে খেতে লাগলো s যারা সমতল দেশ পেলে, চাষবাস শিখলে, তারা পেটের দায়ে অনেকটা নিশ্চিন্ত হয়ে চিন্তা করবার অবকাশ পেলে, তারা অধিকতর সভ্য হ’তে লাগলো। কিন্তু সভ্যতার সঙ্গে সঙ্গে শরীর দুর্বল হ’তে লাগলো। ষাদের শরীর দিনরাত খোলা হাওয়ায় থাকে, মাংসপ্রধান আহার তাদের ; আর যারা ঘরের মধ্যে বাস করে, শস্তপ্রধান আহার তাদের ; অনেক পার্থক্য হ’তে লাগলো। , শিকারী বা পশুপাল বা মৎসজীবী আহারে অনটন হলেই ডাকাত বা বোম্বেটে হয়ে সমতলবাসীদের লুঠতে আরম্ভ করলে। সমতলবাসীরা