পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য * 》> এর টানা হচ্ছে—বর্ণাশ্রমাচার, এর পোড়েন—প্রাকৃতিক দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষনিবারণ । তুমি ইউরোপী, কোন দেশকে কবে ভাল করেছ? অপেক্ষাকৃত অবনত জাতিকে তোলবার তোমার শক্তি কোথায় ? যেখানে দুর্বল জাতি পেয়েছ, তাদের সমূলে উৎসাদন করেছ, তাদের জমিতে তোমরা বাস করছ, তারা একেবারে বিনষ্ট হয়ে গেছে। তোমাদের আমেরিকার ইতিহাস কি ? তোমাদের অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিলণ্ড, প্যাসিফিক দ্বীপপুঞ্জ—তোমাদের আফ্রিকা ? কোথা সে সকল বুনো জাত আজ ? একেবারে নিপাত, বন্য পশুবৎ তাদের তোমরা মেরে ফেলেছ ; যেখানে তোমাদের শক্তি নাই, সেথ মাত্র অন্য জগত জীবিত । আর ভারতবর্ষ তা কস্মিন কালেও করেননি। আর্যেরা অতি দয়াল ছিলেন। তাদের অখণ্ড সমুদ্রবং বিশাল হৃদয়ে, অমানব-প্রতিভাসম্পন্ন মাথায় ওসব আপাতরমণীয় পশিব প্রণালী কোন কালেও স্থান পায়নি। স্বদেশী আহাম্মক ! যদি আর্ষের বুনোদের মেরে ধীরে বাস করত, তা হ’লে এ বর্ণাশ্রমের স্বষ্টি কি হ’ত ? ইউরোপের উদ্দেশ্য-সকলকে নাশ করে আমরা বেঁচে থাকবে । আর্যদের উদ্দেশ্য—সকলকে আমাদের সমান ক’রব, আমাদের চেয়ে বড় করব। ইউরোপের সভ্যতার উপায়—তলওয়ার ; আর্যের উপায়—বৰ্ণবিভাগ। শিক্ষা সভ্যতার তারতম্যে, সভ্যতা শেখবার সোপান—বর্ণ-বিভাগ। ইউরোপে বলবানের জয়, দুর্বলের মৃত্যু ; ভারতবর্ষের প্রত্যেক সামাজিক নিয়ম দুর্বলকে রক্ষা করবার জন্য । পরিশিষ্ট৫ ইউরোপীরা যার এত বড়াই করে, সে সভ্যতার উন্নতির (Progress of Civilization ) মানে কি ? তার মানে এই যে, উদ্দেশুসিদ্ধি—তুমুচিত ১ প্রাচীন আয সমাজব্যবস্থায় চারি বর্ণ—ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈষ্ঠ ও শূদ্র ; চারি আশ্রম— ব্ৰহ্মচর্য, গার্হস্থ্য, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস ।

  • স্বামীজীর দেহত্যাগের, পরে তাহার কাগজপত্রের সহিত প্রাচ্য ও পাশ্চাতো'র এই অংশটুকু পাওয়া যায়।