পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ X ૨ স্বামীজীর বাণী ও রচনা উপায়কে উচিত করে। চুরি, মিথ্যা এবং ফাসি অথবা স্টানলি (Stanley ) দ্বারা তার সমভিব্যাহারী ক্ষুধার্ত মুসলমান রক্ষীদের—এক গ্রাস অল্প চুরি করার দরুন চাবকনে, এ-সকলের ঔচিত্য বিধান করে ; দূর হও, আমি ওথায় আসতে চাই’-রূপ বিখ্যাত ইউরোপী নীতি, যার দৃষ্টাস্ত—যেথায় ইউরোপী-আগমন, সেথাই আদিম জাতির বিনাশ—সেই নীতির ঔচিত্য বিধান করে! এই সভ্যতার অগ্রসরণ লণ্ডন নগরীতে ব্যভিচারকে, পারিতে স্ত্রীপুত্রাদিকে অসহায় অবস্থায় ফেলে পালানোকে এবং আত্মহত্যা করাকে ‘সামান্ত ধৃষ্টতা জ্ঞান করে—ইত্যাদি । এখন ইসলামের প্রথম তিন শতাব্দীব্যাপী ক্ষিপ্র সভ্যতাবিস্তারের সঙ্গে ক্রিশানধর্মের প্রথম তিন শতাব্দীর তুলনা কর। ক্রিস্টানধর্ম প্রথম তিন শতাব্দীতে জগৎসমক্ষে আপনাকে পরিচিত করতেও সমর্থ হয়নি, এবং যখন কনস্টাণ্টাইন ( Constantine )-এর তলওয়ার একে রাজ্যমধ্যে স্থান দিলে, সেদিন থেকে কোন কালে ক্রিশানী ধর্ম আধ্যাত্মিক বা সাংসারিক সভ্যতাবিস্তারের কোন সাহায্য করেছে ? যে ইউরোপী পণ্ডিত প্রথম প্রমাণ করেন যে পৃথিবী সচলা, ক্রিশানধর্ম তার কি পুরস্কার দিয়েছিল ? কোন বৈজ্ঞানিক কোন কালে ক্রিশগনী ধর্মের অনুমোদিত ? ক্রিশ্চনী সঙ্ঘের সাহিত্য কি দেওয়ানী বা ফৌজদারী বিজ্ঞানের, শিল্প বা পণ্য-কৌশলের অভাব পূরণ করতে পারে ? আজ পর্যন্ত 'চর্চ’ প্রোফেন ( ধর্ম ভিন্ন অন্য বিষয়াবলম্বনে লিখিত ) সাহিত্যপ্রচারে অনুমতি দেন না । আজ যে মনুষ্যের বিদ্যা এবং বিজ্ঞানে প্রবেশ আছে, তার কি অকপট ক্রিশান হওয়া সম্ভব ? নিউ টেস্টামেণ্ট ( New Testament )-এ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনও বিজ্ঞান বা শিল্পের প্রশংসা নেই। কিন্তু এমন বিজ্ঞান বা শিল্প নেই যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোরান বা হদিসের বহু বাক্যের দ্বারা অনুমোদিত এবং উৎসাহিত নয়। ইউরোপের সর্বপ্রধান মনীষিগণ—ইউরোপের ভলটেয়ার, ডারউইন, বুকনাক্স, ফ্লমারিয়, ভিক্টর হুগো-কুল বর্তমানকালে ক্রিশানী দ্বারা কটুভাষিত এবং অভিশপ্ত, অপরদিকে এই সকল পুরুষকে ইসলাম বিবেচনা করেন যে, এই সকল পুরুষ আস্তিক, কেবল ইহাদের পয়গম্বর-বিশ্বাসের অভাব। ধৰ্মসকলের উন্নতির বাধকত্ব বা সহায়কত্ব বিশেষরূপে পরীক্ষিত হোক ; দেখা যাবে ইসলাম যেথায় গিয়েছে, সেথায়ই আদিমনিবাসীদের রক্ষা