পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্তমান ভারত ૨૭૭ ইহার পরিণাম অসরলতা—হৃদয়ের অতি সঙ্কীর্ণ, অতি অনুদার ভাব ; আর সর্বাপেক্ষ মারাত্মক, নিদারুণ ঈর্ষাপ্রস্থত অপরাসহিষ্ণুতা। যে বলে, আমার দেবতা বশ, রোগাদির উপর আধিপত্য, ভূতপ্ৰেতাদির উপর বিজয়, যাহার বিনিময়ে আমার পার্থিব সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ঐশ্বর্য, তাহ অন্তকে কেন দিব ? আবার তাহা সম্পূর্ণ মানসিক । গোপন করিবার স্থবিধা কত ! এ ঘটনাচক্রমধ্যে মানবপ্রকৃতির যাহা হইবার তাহাই হয় ; সর্বদা আত্মগোপন অভ্যাস করিতে করিতে স্বার্থপরতা ও কপটতার আগমন ও তাহার বিযময় ফল ! কালে গোপনেচ্ছার প্রতিক্রিয়াও আপনার উপর আসিয়া পড়ে । বিনাভ্যাসে বিনা বিতরণে প্রায় সর্ববিদ্যার নাশ ; যাহা বাকী থাকে, তাহাও অলৌকিক দৈব উপায়ে প্রাপ্ত বলিয়া আর তাহাকে মার্জিত করিবারও (নৃতম বিস্তার কথা তো দূরে থাকুক ) চেষ্টা বৃথা বলিয়া ধারণা হয়। তাহার পর বিদ্যাহীন, পুরুষকারহীন, পূর্বপুরুষদের নামমাত্রধারী পুরোহিতকুল পৈতৃক অধিকার পৈতৃক সম্মান, পৈতৃক আধিপত্য অক্ষুণ্ণ রাখিবার জন্য যেন তেন প্রকারেণ চেষ্টা করেন ; অন্যান্য জাতির সহিত কাজেই বিষম সংঘর্ষ। প্রাকৃতিক নিয়মে জরাজীর্ণের স্থানে নব প্রাণেস্মেষের প্রতি-স্থাপনের ১ স্বাভাবিক চেষ্টায় উহা সমুপস্থিত হয়। এ সংগ্রামে জয়বিজয়ের ফলাফল পূর্বেই বর্ণিত হইয়াছে। উন্নতির সময় পুরোহিতের যে তপস্যা, যে সংযম, যে ত্যাগ সত্যের অমুসন্ধানে সম্যক প্রযুক্ত ছিল, অবনতির পূর্বকালে তাহাই আবার কেবলমাত্র ভোগ্যসংগ্রহে বা আধিপত্য-বিস্তারে সম্পূর্ণ ব্যয়িত। যে শক্তির আধারত্বে তাহার মান, তাহার পূজা, সেই শক্তিই এখন স্বৰ্গধাম হইতে নরকে সমানীত । উদ্দেশ্য-হারা খেই-হারা পৌরোহিত্যশক্তি উর্ণকীটবং আপনার কোষে আপনিই বদ্ধ ; যে শৃঙ্খল অপরের পদের জন্য পুরুষানুক্রমে অতি যত্বের সহিত বিনির্মিত, তাহা নিজের গতিশক্তিকে শত বেষ্টনে প্রতিহত করিয়াছে ; যে সকল পুঙ্খানুপুঙ্খ বহিঃশুদ্ধির আচার-জাল সমাজকে বজ্রবন্ধনে রাখিার জন্য চারিদিকে বিস্তৃত হইয়াছিল, তাহারই তন্তুরাশিদ্বারা আপাদমস্তক-বিজড়িত পৌরোহিত্যশক্তি হতাশ হইয়া নিদ্রিত। আর উপায় নাই, এ জাল ছিড়িলে ১ পুনরায় স্থাপন