পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্তমান ভারত २७२ দেবত্বের আরোপ আপনাতে করিয়া অপর পুরুষে কেবল হীন মনুষ্যত্ব-মাত্র দেখেন ! স্ব হউক বা কু হউক, র্তাহার ইচ্ছার ব্যাঘাতই মহাপাপ। পালনের স্থানে কাজেই পীড়ন আসিয়া পড়ে—রক্ষণের স্থানে ভক্ষণ। যদি সমাজ নিবীর্য হয়, নীরবে সহ করে, রাজা ও প্রজা উভয়েই হীন হইতে হীনতর অবস্থায় উপস্থিত হয় এবং শীঘ্রই বীর্যবান অন্য জাতির ভক্ষ্যরূপে পরিণত হয়। যেথায় সমাজশরীর বলবান, শীঘ্রই অতি প্রবল প্রতিক্রিয়া উপস্থিত হয় এবং তাহার আস্ফালনে ছত্র, দণ্ড, চামরাদি অতি দূরে বিক্ষিপ্ত ও সিংহাসনাদি চিত্রশালিকারক্ষিত প্রাচীন দ্রব্যবিশেষের ন্যায় হইয়া পড়ে। বৈশ্বশক্তি যে মহাশক্তির ভ্ৰভঙ্গে থরথরি রক্ষনাথ কাপে লঙ্কাপুরে, যাহার হস্তধৃত স্থবৰ্ণভাগুরূপ বকাণ্ড-প্রত্যাশায় মহারাজ হইতে ভিক্ষুক পর্যন্ত বকপঙক্তির ন্যায় বিনীতমস্তকে পশ্চাদগমন করিতেছে, সেই বৈশ্বশক্তির বিকাশই পূর্বোক্ত প্রতিক্রিয়ার ফল । ব্রাহ্মণ বলিলেন, বিদ্যা সকল বলের বল, “আমি সেই বিদ্যা-উপজীবী, সমাজ আমার শাসনে চলিবে”—দিনকতক তাহাই হইল । ক্ষত্রিয় বলিলেন, *আমার অস্ত্রবল না থাকিলে বিদ্যাবল-সহিত কোথায় লোপ পাইয়া ষাও, আমিই শ্রেষ্ঠ’ । কোষমধ্যে অসি-ঝনৎকার হইল, সমাজ অবনতমস্তকে [ উহ। ] গ্রহণ করিল। বিদ্যার উপাসকও সর্বাগ্রে রাজোপাসকে পরিণত হইলেন ! বৈঙ্গ বলিতেছেন, "উন্মাদ ! “অখণ্ডমণ্ডলাকারং ব্যাপ্তং যেন চরাচরং’ তোমরা র্যাহাকে বল, তিনিই এই মুদ্রারূপী অনন্তশক্তিমান আমার হস্তে । দেখ, ইহার কৃপায় আমিও সর্বশক্তিমান। হে ব্রাহ্মণ, তোমার তপ, জপ, বিদ্যাবুদ্ধি—ইহারই প্রসাদে আমি এখনই ক্রয় করিব। হে মহারাজ, তোমার অস্ত্রশস্ত্র, তেজবীর্য—ইহার কৃপায় আমার অভিমতসিদ্ধির জন্য প্রযুক্ত হইবে। এই যে অতিবিস্তৃত, অত্যুন্নত কারখানাসকল দেখিতেছ, ইহারা আমার মধুক্রম। ঐ দেখ, অসংখ্য মক্ষিকারূপী শূদ্রবর্গ তাহাতে অনবরত মধুসঞ্চয় করিতেছে, কিন্তু সে মধু পান করিবে কে ?— আমি । যথাকালে আমি পশ্চাদেশ হইতে সমস্ত মধু নিপীড়ন করিয়া লইতেছি।” 通