পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্তমান ভারত ' २ 8¢ শক্তির অধিকাংশ ভাগই বিজিত জাতিকে স্ববশে রাখিবার চেষ্টায় ও আয়োজনে প্রযুক্ত হইয়া বৃথা ব্যয়িত হয়। প্রজাতন্ত্র রোমাপেক্ষা সম্রাড়ধিষ্ঠিত রোমকশাসনে বিজাতীয় প্রজাদের মুখ অধিক এজন্যই হইয়াছিল। এজন্যই বিজিতয়াহুদীবংশসম্ভূত হইয়াও খ্ৰীষ্টধর্মপ্রচারক পৌল (St. Paul) কেশরী (Cesar) সম্রাটের সমক্ষে আপনার অপরাধ-বিচারের ক্ষমতা প্রাপ্ত হইয়াছিলেন । ব্যক্তিবিশেষ ইংরেজ কৃষ্ণবর্ণ বা ‘নেটিভ অর্থাৎ অসভ্য বলিয়া আমাদিগকে অবজ্ঞা করিল, ইহাতে ক্ষতি-বৃদ্ধি নাই। আমাদের আপনার মধ্যে তদপেক্ষ অনেক অধিক জাতিগত ঘৃণাবুদ্ধি আছে ; এবং মূর্য ক্ষত্রিয় রাজা সহায় হইলে ব্রাহ্মণের যে শূদ্রদের 'জিহাচ্ছেদ, শরীরভেদাদি পুনরায় করিবার চেষ্টা করিবেন না, কে বলিতে পারে ? প্রাচ্য আর্যাবর্তে সকল জাতির মধ্যে যে সামাজিক উন্নতিকল্পে কিঞ্চিৎ সদ্ভাব দৃষ্ট হইতেছে, মহারাষ্ট্রদেশে ব্রাহ্মণের ‘মারাঠা জাতির যে সকল স্তবস্তুতি আরম্ভ করিয়াছেন, নিম্ন জাতিদের—এখনও তাহা নিঃস্বার্থভাব হইতে সমুখিত বলিয়া ধারণা হইতেছে না। কিন্তু ইংরেজসাধারণের মনে ক্রমশ: এক ধারণা উপস্থিত হইতেছে যে, ভারতসাম্রাজ্য তাহাদের অধিকারচ্যুত হইলে ইংরেজজাতির সর্বনাশ উপস্থিত হইবে। অতএব ‘যেন তেন প্রকারেণ ভারতে ইংলণ্ডাধিকার প্রবল রাখিতে হইবে । এই অধিকার-রক্ষার প্রধান উপায় ভারতবাসীর বক্ষে ইংরেজজাতির ‘গৌরব’ সদা জাগরুক রাখা । এই বুদ্ধির প্রাবল্য ও তাহার সহযোগী চেষ্টার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি দেখিয়া যুগপৎ হাস্য ও করুণরসের উদয় হয়। ভারতনিবাসী ইংরেজ বুঝি ভুলিয়া যাইতেছেন যে, যে বীর্য অধ্যবসায় ও স্বজাতির একান্ত সহানুভূতিবলে তাহারা এই রাজ্য অর্জন করিয়াছেন, যে সদ্যজাগরূক বিজ্ঞানসহায় বাণিজ্য-বুদ্ধিবলে সর্বধনপ্রস্থ ভারতভূমিও ইংলণ্ডের প্রধান পণ্যবীথিকা হইয়া পড়িয়াছে, যতদিন জাতীয় জীবন হইতে এই সকল গুণ লোপ না হয়, ততদিন তাহদের সিংহাসন অচল । এই সকল গুণ যতদিন ইংরেজের থাকিবে এমন ভারতরাজ্য—শত শত লুপ্ত হইলেও শত শত আবার অর্জিত হইবে । কিন্তু যদি ঐ সকল গুণপ্রবাহের বেগ মন্দীকৃত হয়, বৃথা গৌরবঘোষণে কি সাম্রাজ্য শাসিত হইবে ? এজন্য এ সকল গুণের প্রাবল্য সত্ত্বেও ১ রোমক সম্রাট সাঁজার