পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ 8br স্বামীজীর বাণী ও রচনা দ্বারা নিম্পন্ন হয় না । শ্বেতাঙ্গ যে ভাবের, যে আচারের প্রশংসা করে, তাহাই ভাল ; তাহারা যাহার নিন্দ করে, তাহাই মন্দ । হা ভাগ্য, ইহা অপেক্ষ নিবুদ্ধিতার পরিচয় কি ? পাশ্চাত্য নারী স্বাধীনভাবে বিচরণ করে, অতএব তাহাই ভাল ; পাশ্চাত্য নারী স্বয়ংবর, অতএব তাহাই উন্নতির উচ্চতম সোপান ; পাশ্চাত্য পুরুষ আমাদের বেশ-ভূষা অশন-বসন ঘৃণা করে, অতএব তাহা অতি মন্দ ; পাশ্চাত্যেরা মূর্তিপূজা দোষাবহ বলে ; মূর্তিপূজা দূষিত, সন্দেহ কি ? পাশ্চাত্যেরা একটি দেবতার পূজা মঙ্গলপ্রদ বলে, অতএব আমাদের দেবদেবী গঙ্গাজলে বিসর্জন দাও । পাশ্চাত্যেরা জাতিভেদ ঘৃণিত বলিয়া জানে, অতএব সর্ব বর্ণ একাকার হও । পাশ্চাত্যের বাল্যবিবাহ সর্ব দোষের আকর বলে, অতএব তাহাও অতি মন্দ–নিশ্চিত । আমরা এই সকল প্রথা রক্ষণোপযোগী বা ত্যাগযোগ্য—ইহার বিচার করিতেছি না ; তবে যদি পাশ্চাত্যদিগের অবজ্ঞাষ্টিমাত্রই আমাদের রীতিনীতির জঘন্যতার কারণ হয়, তাহার প্রতিবাদ অবশ্ব কর্তব্য। বর্তমান লেখকের পাশ্চাত্য সমাজের কিঞ্চিৎ প্রত্যক্ষ জ্ঞান আছে ; তাহাতে ইহাই ধারণা হইয়াছে যে, পাশ্চাত্য সমাজ ও ভারত-সমাজের মূল গতি ও উদ্দেশ্বের এতই পার্থক্য যে, পাশ্চাত্য অনুকরণে গঠিত সম্প্রদায়মাত্রই এদেশে নিষ্ফল হইবে । র্যাহারা পাশ্চাত্য সমাজে বসবাস না করিয়া, পাশ্চাত্য সমাজের স্ত্রীজাতির পবিত্রতারক্ষার জন্য স্ত্রী-পুরুষ-সংমিশ্রণের যে সকল নিয়ম ও বাধা প্রচলিত আছে, তাহা না জানিয়া স্ত্রী-পুরুষের অবাধ সংমিশ্রণ প্রশ্রয় দেন, র্তাহীদের সহিত আমাদের অণুমাত্রও সহানুভূতি নাই। পাশ্চাত্য দেশেও দেখিয়াছি, দুর্বল জাতির সস্তানেরা ইংলণ্ডে যদি জন্মিয় থাকে, আপনাদিগকে স্পানিয়ার্ড, পোতুগীজ, গ্রীক ইত্যাদি না বলিয়া, ইংরেজ বলিয়। পরিচয় দেয়। বলবানের দিকে সকলে যায় ; গৌরবান্বিতের গৌরবচ্ছটা নিজের গাত্রে কোন প্রকারে একটুও লাগে—দুর্বলমাত্রেরই এই ইচ্ছা। যখন ভারতবাসীকে ইউরোপী বেশ-ভূষ-মণ্ডিত দেখি, তখন মনে হয়, বুঝি ইহারা পদদলিত বিদ্যাহীন দরিন্দ্র ভারতবাসীর সহিত আপনাদের স্বজাতীয়ত্ব স্বীকার করিতে লজ্জিত ! চতুর্দশশত বর্ষ যাবৎ হিন্দুরক্তে পরিপালিত পার্সী এক্ষণে আর ‘নেটিভ' নহেন। জাতিহীন ব্রাহ্মণৰ্ম্মন্তের ব্রহ্মণ্যগৌরবের নিকটে মহারথী