পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘রামকৃষ্ণ ও র্তাহার উক্তি’ অধ্যাপক ম্যাক্সমুলার-লিখিত পুস্তকের সমালোচনা ] অধ্যাপক মীক্সমুলার পাশ্চাত্য সংস্কৃতজ্ঞদিগের অধিনায়ক। যে ঋগ্বেদসংহিতা পূর্বে সমগ্র কেহ চক্ষেও দেখিতে পাইত না, ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির বিপুল ব্যয়ে এবং অধ্যাপকের বহুবর্ষব্যাপী পরিশ্রমে এক্ষণে তাহা অতি সুন্দরব্রুপে মুদ্রিত হইয়৷ সাধারণের পাঠ্য। ভারতের দেশদেশান্তর হইতে সংগৃহীত হস্তলিপি-পুথির অধিকাংশ অক্ষরগুলিই বিচিত্র এবং অনেক কথাই অশুদ্ধ ; বিশেষ, মহাপণ্ডিত হইলেও বিদেশীর পক্ষে সেই অক্ষরের শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয় এবং অতি স্বল্পাক্ষর জটিল ভাস্থ্যের বিশদ অর্থ বোধগম্য করা কি কঠিন, তাহ আমরা সহজে বুঝিতে পারি না । অধ্যাপক ম্যাক্সমুলারের জীবনে এই ঋগ্বেদ-মুদ্রণ একটি প্রধান কার্য। এতদব্যতীত আজীবন প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যে র্তাহার বসবাস--জীবন-যাপন ; কিন্তু তাহা বলিয়াই ধে অধ্যাপকের কল্পনার ভারতবর্ষ—বেদ-ঘোষ-প্রতিধ্বনিত, যজ্ঞধূম-পূর্ণকাশ, বশিষ্ট-বিশ্বামিত্র-জনক-যাজ্ঞবল্ক্যাদি-বহুল, ঘরে ঘরে গাগাঁমৈত্রেয়ী-সুশোভিত, শ্রেীত ও গৃহস্থত্রের নিয়মাবলী-পরিচালিত, তাহা নহে। বিজাতি-বিধর্মি-পদদলিত, লুপ্তাচার, লুপ্তক্রিয়, ম্ৰিয়মাণ, আধুনিক ভারতের কোন কোণে কি নূতন ঘটনা ঘটিতেছে, তাহাও অধ্যাপক সদাজাগরূক হইয়া সংবাদ রাখেন । এদেশের অনেক অ্যাংলো-ইণ্ডিয়ান, অধ্যাপকের পদযুগল কখনও ভারত-মৃত্তিক-সংলগ্ন হয় নাই বলিয়া ভারতবাসীর রীতিনীতি আচার ইত্যাদি সম্বন্ধে তাঁহার মতামতে নিত্যস্ত উপেক্ষা প্রদর্শন করেন। কিন্তু তাহাদের জানা উচিত যে, আজীবন এদেশে বাস করিলেও অথবা এদেশে জন্মগ্রহণ করিলেও যে-প্রকার সঙ্গ, সেই সামাজিক শ্রেণীর বিশেষ বিবরণ ভিন্ন অন্য শ্রেণীর বিষয়ে অ্যাংলো-ইণ্ডিয়ান রাজপুরুষকে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ থাকিতে হয়। বিশেষ, জাতিবিভাগে বিভক্ত এই বিপুল সমাজে একজাতির পক্ষে অন্য জাতির আচারাদি বিশিষ্টরূপে জানাই কত দুরূহ। কিছুদিন হইল, কোনও প্রসিদ্ধ অ্যাংলো-ইণ্ডিয়ান কর্মচারীর লিখিত ‘ভারতাধিবাস’ নামধেয় পুস্তকে এরূপ এক অধ্যায় দেখিয়াছি—‘দেশীয় পরিবার-রহস্ত’। মনুস্থ্যহৃদয়ে রহস্যজ্ঞানেচ্ছা প্রবল