পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘রামকৃষ্ণ ও তাহার উক্তি' ভারতের ভাবী মঙ্গলের, ভাবী উন্নতির আশালতার মূলে বারিসেচন করিয়া নূতন প্রাণ সঞ্চার করিল। পাশ্চাত্য জগতে কতকগুলি মহাত্মা আছেন, র্যাহারা নিশ্চিত ভারতের কল্যাণকাজক্ষী । কিন্তু ম্যাক্সমুলারের অপেক্ষ ভারতহিতৈষী ইউরোপখণ্ডে আছেন,কি না, জানি না । ম্যাক্সমুলার যে শুধু ভারতহিতৈষী, তাহা নহেন— ভারতের দর্শন-শাস্ত্রে, ভারতের ধর্মে তাহার বিশেষ আস্থা; অদ্বৈতবাদ যে ধৰ্মরাজ্যের শ্রেষ্ঠতম আবিস্ক্রিয়া, তাহ অধ্যাপক সর্বসমক্ষে বারংবার স্বীকার করিয়াছেন । যে সংসারবাদ , দেহাত্মবাদী খ্ৰীষ্টিয়ানের বিভীষিকাপ্রদ, তাহা ও তিনি স্বীয় অনুভূতিসিদ্ধ বলিয়া দৃঢ়রুপে বিশ্বাস করেন ; এমন কি, বোধ হয় যে, ইতিপূর্ব-জন্ম তাহার ভারতেই ছিল, ইহাই তাহার ধারণ এবং পাছে ভারতে আসিলে তাহার বৃদ্ধ শরীর সহসা-সমুপস্থিত পূর্বস্মৃতিরাশির প্রবল বেগ সহ করিতে না পারে, এই ভয়ই অধুনা ভারতীগমনের প্রধান প্রতিবন্ধক । তবে গৃহস্থ মানুষ, যিনিই হউন, সকল দিক বজায় রাখিয়া চলিতে হয়। যখন সর্বত্যাগী উদাসীনকে অতি বিশুদ্ধ জানিয়াও লোকনিন্দিত আচারের অনুষ্ঠানে কম্পিতকলেবর দেখা যায়, শূকরীবিষ্ঠা মুখে বলিয়াও যখন ‘প্রতিষ্ঠা’র লোভ, অপ্রতিষ্ঠার ভয় মহা-উগ্রতাপসেরও কার্য-প্রণালীর পরিচালক, তখন সর্বদা লোকসংগ্রহেচ্ছ বহুলোকপূজ্য গৃহস্থের যে অতি সাবধানে নিজের মনোগত ভাব প্রকাশ করিতে হইবে, ইহাতে কি বিচিত্রতা ? যোগশক্তি ইত্যাদি গঢ় বিষয় সম্বন্ধেও যে অধ্যাপক একেবারে অবিশ্বাসী, তাহাও নহেন ! ‘দার্শনিক-পূর্ণ ভারতভূমিতে যে সকল ধর্ম-তরঙ্গ উঠিতেছে’ তাহদের কিঞ্চিং বিবরণ ম্যাক্স্যুলার প্রকাশ করেন, কিন্তু আক্ষেপের বিষয় অনেকে উহার মর্ম বুঝিতে অত্যন্ত ভ্ৰমে পড়িয়াছেন এবং অত্যন্ত অযথা বর্ণন করিয়াছেন । ইহা প্রতিবিধানের জন্য এবং ‘এসোটেরিক বৌদ্ধমত, থিয়সফি প্রভৃতি বিজাতীয় নামের পশ্চাতে ভারতবাসী সাধুসন্ন্যাসীদের অলৌকিক ক্রিয়াপূর্ণ অদ্ভুত যে-সকল উপন্যাস ইংলণ্ড ও আমেরিকার সংবাদপত্রসমূহে উপস্থিত হইতেছে, তাহার মধ্যে কিঞ্চিৎ সত্য আছে’, ইহা দেখাইবার ২ পুনর্জন্মবাদ * *sūtās alo-(The Life and sayings of Ramakrishna by Prof. Max Müller) pp. 1 and 2.