পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘রামকৃষ্ণ ও র্তাহার উক্তি’ S X মিশনরী মহোদয়েরা হিন্দুদেবদেবীর অতি অযথা বর্ণন করিয়া তাহীদের উপাসকদিগের মধ্যে যে যথার্থ ধাৰ্মিক লোক কখন উদ্ভূত হইতে পারে না— এইটি প্রমাণ করিতে প্রাণপণে চেষ্টা করিতেছিলেন ; প্রবল বন্যার সমক্ষে তৃণগুচ্ছের ন্যায় তাহ ভাসিয়া গেল, আর পূর্বোক্ত স্বদেশী সম্প্রদায় শ্রীরামকৃষ্ণের শক্তিসম্প্রসারণরূপ প্রবল অগ্নি নির্বাণ করিবার উপায় চিন্তা করিতে করিতে হতাশ হইয়া পড়িয়াছেন। ঐশী শক্তির সমক্ষে জীবের শক্তি কি ? অবশু দুই দিক্ হইতেই এক প্রবল আক্রমণ বৃদ্ধ অধ্যাপকের উপর পতিত হইল। বৃদ্ধ কিন্তু হটবার নহেন ; এ সংগ্রামে তিনি বহুবার পারোত্তীর্ণ। এবারও হেলায় উত্তীর্ণ হইয়াছেন এবং ক্ষুদ্র আততায়িগণকে ইঙ্গিতে নিরস্ত করিবার জন্য এবং উক্ত মহাপুরুষ ও তাহার ধর্ম যাহাতে সর্বসাধারণে জানিতে পারে, সেইজন্য তাহার অপেক্ষাকৃত সম্পূর্ণ জীবনী ও উপদেশ সংগ্রহপূর্বক ‘রামকৃষ্ণ ও তাহার উক্তি’ নামক পুস্তক প্রকাশ করিয়া উহার রামকৃষ্ণ নামক অধ্যায়ে নিম্নলিখিত কৃথাগুলি বলিয়াছেন । উক্ত মহাপুরুষ ইদানীং ইউরোপ ও আমেরিকায় বহুল প্রতিষ্ঠিত হইয়াছেন, তথায় তাহার শিষ্যেরা মহোৎসাহে তাহার উপদেশ প্রচার করিতেছেন এবং বহু ব্যক্তিকে, এমন কি, খ্ৰীষ্টিয়ানদের মধ্য হইতেও রামকৃষ্ণ-মতে আনয়ন করিতেছেন, একথা আমাদেব নিকট আশ্চর্যবৎ এবং কষ্ট্রে বিশ্বাস-যোগ্য. তথাপি প্রত্যেক মহুযুহৃদয়ে ধর্ম-পিপাসা বলবতী, প্রত্যেক হৃদয়ে প্রবল ধর্মক্ষুধা বিদ্যমান, যাহা বিলঙ্গে বা শীঘ্রই শান্ত হইতে চাহে। এই সকল ক্ষুধার্ত প্রাণে রামকৃষ্ণের ধর্ম বাহিরের কোন শাসনাধীনে আসে না বলিয়াই অমৃতবং গ্রাহ হয়। অতএব রামকৃষ্ণ-ধর্মচারীদের যে প্রবল সংখ্যা আমরা শুনিতে পাই, তাহা কিঞ্চিৎ অতিরঞ্জিত যদ্যপি হয়, তথাপি যে ধর্ম আধুনিক সময়ে এতাদৃশী সিদ্ধি লাভ করিয়াছে এবং যাহা বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে সম্পূর্ণ সত্যতার সহিত জগতের সর্বপ্রাচীন ধর্ম ও দর্শন বলিয়া ঘোষণা করে এবং যাহার নাম 'বেদান্ত’ অর্থাৎ বেদশেষ বা বৈদের সর্বোচ্চ উদ্দেশু, তাহ অম্মদাদির অতিযত্বের সহিত মনঃসংযোগার্হ।’ ৪ আলোচ্য গ্রন্থ—pp. 10 and it.