পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

"রামকৃষ্ণ ও তাহার উক্তি’ >\。 বলি, এমন কথার সমাবেশ তাহাতে থাকিলেও তাহার অপূর্ব বালবৎ কামগন্ধহীনতার জন্য ঐ সকল শব্দ-প্রয়োগ দোষের না হইয়া ভূষণস্বরূপ হইয়াছে। অথচ ইহাই একটি প্রবল আক্ষেপ ! অপর আক্ষেপ এই যে, তিনি সন্ন্যাসগ্রহণ করিয়া স্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুর ব্যবহার করিয়াছিলেন। . তাহাতে অধ্যাপক উত্তর দিতেছেন যে, তিনি স্ত্রীর অনুমতি লইয়া সমাসব্রত ধারণ করেন এবং যতদিন মর্ভধামে ছিলেন, তাহার সদৃশ স্ত্রী পতিকে গুরুভাবে গ্রহণ করিয়া স্বেচ্ছায় পরমানন্দে তাহার উপদেশ অনুসারে আকুমার ব্রহ্মচারিণীরূপে ভগবংসেবায় নিযুক্ত ছিলেন। আরও বলেন যে, শরীরসম্বন্ধ না হইলে কি বিবাহে এতই অমুখ ? “আর শরীরসম্বন্ধ না রাখিয়। ব্রহ্মচারিণী পত্নীকুে অমৃতস্বরূপ ব্রহ্মানন্দের ভাগিনী করিয়া ব্রহ্মচারী পতি যে পরম পবিত্রভাবে জীবন অতিবাহিত করিতে পারেন, এ বিষয়ে উক্ত ব্রতধারণকারী ইউরোপ-নিবাসীরা সফলকাম হয় নাই, আমরা মনে করিতে পারি, কিন্তু হিন্দুর যে অনায়াসে ঐ প্রকার কামজিং অবস্থায় কালাতিপাত করিতে পারে, ইহা আমরা বিশ্বাস করি।" অধ্যাপকের মুখে ফুলচন্দন পডুক ! তিনি বিজাতি, বিদেশী হইয়া আমাদের একমাত্র ধর্মসহায় ব্রহ্মচর্য বুঝিতে পারেন, এবং ভারতবর্ষে যে এখনও বিরল নহে, বিশ্বাস করেন ; আর আমাদের ঘরের মহাবীরের বিবাহে শরীরসম্বন্ধ বই আর কিছুই দেখিতে পাইতেছেন মা ! যাদুশ ভাবনা যস্ত ইত্যাদি। আবার অভিযোগ এই যে, তিনি বেশ্বাদিগকে অত্যন্ত ঘৃণা করিতেন না । ইহাতে অধ্যাপকের উত্তর বড়ই মধুর ; তিনি বলেন, শুধু রামকৃষ্ণ নহেন, অন্যান্য ধর্মপ্রবর্তকেরাও এ অপরাধে অপরাধী । আহা ! কি মিষ্ট্র কথা—শ্ৰীভগবান বুদ্ধদেবের রুপাপাত্রী বেশ্য অস্বীপালী ও হজরং ঈশার দয়া প্রাপ্ত সামরীয়া নারীর কথা মনে পড়ে । আরও অভিযোগ, মদ্যপানের উপরও তাহার তাদৃশ ঘূণা ছিল না। হরি! হরি ; একটু মদ খেয়েছে বলে সে লোকটার ছায়াও স্পশ করা হবে না”—এই না অর্থ ? দারুণ অভিযোগই বটে ! মাতাল, বেশ্বা, চোর, দুষ্টদের—মহাপুরুষ কেন দূর দূর করিয়া তাড়াইতেন না, আর চক্ষু মুদ্রিত করিয়া ছাদি ভাষায় সানাইয়ের ৫ আলোচ্য গ্রন্থ-p. 66.